পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-চরিত । ক্ৰমে আদালতের সর্বোচ্চপদ সেরেস্তাদারিতে উন্নীত হইলেন । রাধামোহনের উন্নতির সঙ্গে তাহার অপর ভ্রাতাগণেরও উন্নতিব পথ পরিস্কৃত হইল । তাহার মধ্যম মদনমোহন, প্রথমে, যশোহরের মীর-মুন্সী এবং পরে, কুমারখালির মুন্সেফ নিযুক্ত হইলেন । তৃতীয় দেবীপ্রসাদ যশোহরের ও সৰ্ব্বকনিষ্ঠ রাজনাবায়ণ কলিকাতা সদর দেওয়ানী আদালতের উকীল হষ্টলেন। চারি ভ্ৰাতাই প্রচুর অর্থ উপাৰ্জন করিতে লাগিলেন এবং তাহাদিগেব ক্রিয়াকলাপ ও দানাদিদ্বারা দত্তবংশ, এই সময় হইতে, যশোহর সমাজে প্ৰতিষ্ঠালাভ করিল ৷ + কুলক্ৰমাগত প্ৰকৃতি অনুসাবে মধুসুদন মুক্তহস্তে ব্যয় করিতে পারিতেন । ধূলিমুষ্টি ও অর্থ উভয়ের মপ্যে। তাহার নিকট অধিক ইতারবিশেষ ছিল না । এই র্যায়শীলতার ন্যায় কবিশক্তিও তিনি, কিয়ৎপরিমাণে, পিতৃপুৰুষগণেব “প্ৰকৃতি হইতে লাভ করিয়াছিলেন । যদিও তাতার পিতৃমাতৃবংশীয়গণের মধ্যে প্ৰকৃত কবি নামের উপযুক্ত কোন ব্যক্তি, কখনও, জন্মগ্রহণ করেন নাই, তথাপি তাতাৰ পূবপুৰুষদিগের মধ্যে অনেকেই কবিতানুৰাগী ছিলেন, এইৰূপ শুনিতে পাওয়া যায়। কথিত আছে, তাহার খুল্লপিতামহ, মাণিকরাম দত্ত, পাবস্য ভাষায় অতি সুন্দৰ কবিতা রচনা করিতে পারিাতেন । মাণিকরাম কোন সন্ত্রান্ত ও ধনাঢ্য মুসলমানের অধীনে কৰ্ম্ম করিতেন এবং প্রতিদিন প্ৰভুকে পারস্য ভাষায় স্বরচিত এক একটী কুলক্ৰমাগত দোষগুণ ।

  • দত্তবংশের ব্যয়শীলতা সম্বন্ধে একটা বৃত্তান্ত নিয়ে সন্নিবিষ্ট হইতেছে। প্ৰথম চাকুরীর প্রায় কুড়ি বৎসর পরে মধুসূদনের জ্যেষ্ঠ পিতৃব্য, রাধামোহন দত্ত, পুত্রের কল্যাণোদ্দেশে, ১০৮ কালী দেবীর পূজা করেন। তাহতে ১০৮টা মহিষ, ১০৮টা মেষ, এবং ১০৮টা ছাগ এক সঙ্গে বলি প্রদত্ত হইয়াছিল, এবং ১০৮টী সুবৰ্ণ নিৰ্ম্মিত জবাপুস্প অঞ্জলি অৰ্পিত হইয়াছিল । সাগরদাড়ীর প্রাচীন ব্যক্তিগণ, এখনও, এই পুজার বিষয় সগৌরবে কীৰ্ত্তন করিয়া থাকেন ।