পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भांकि aiहांदनी চাকরী জ্যোতিন্ময়কে গ্ৰাস করিয়া ফেলিয়াছে। মুখে সে বলে বটে যে, খাটিতে খাটিতে প্ৰাণ গেল, এত খাটুনি মানুষের সন্থ হয় না-বাড়ীর চেয়ে আপিসে থাকিতেই সে ভালবাসে, বাড়ীর লোকের ভাবনা ভাবার চেয়ে কাজেন্ম ভাবনা ভাবিতেই তার আরাম বোধ হয় বেশী। অনেক বয়সে বিবাহ করিলে লোকে নাকি একটু বৌ-পাগলা হয়, জ্যোতিন্ময়েরও হয়তো এরকম পাগলামি একটু আসিয়াছে, কিন্তু সেটা প্ৰকাশ পায় রাত্ৰে শয্যা গ্ৰহণ করিবার সময়, যখন আর কোন কাজ করিবার থাকে না, আর কিছু ভাবিবার থাকে না । আগে বিশ্রাম ছিল শুধু ঘুম, এখন জুটিয়াছে পুতুল নিয়া খেলা করার আমোদ, -অপরিপুষ্ট ও অপরিণত অপরাজিতার বিবৰ্ণ মুখ ও উৎসুক দৃষ্টি শ্রান্তি দূর করিতে সাহায্য করে । সারাদিন মনের রাশ টানিয়া রাখিবার পর আলগা দেওয়া মাত্ৰ প্ৰতিক্রিয়া আরম্ভ হয় প্ৰচণ্ডভাবে, মনের একটা সাময়িক বিকারের মত । কি যে সে করে অপরাজিতাকে নিয়া আর কি যে করে না, কিছুই ঠিক থাকে না। কথা শুনিতে শুনিতে অপরাজিতার মাথা ঘরিয়া যায়, আদরে সোহাগে দম আটকাইয়া আসে,- শান্ত, সহিষ্ণু ও অন্যমনস্ক মানুষটার আকস্মিক প্ৰণয়মূলক উন্মত্ত তার ভয়ে তার বুকের মধ্যে টিপ ঢিপ করিতে থাকে। কোনদিন তার মূৰ্ছিা হওযার উপক্ৰম হয়, ফ্যাকাসে মুখে চটচটে ঘাম দেখা দেয়, চোখ স্তিমিত হইয়া আসে। জ্যোতিৰ্ম্ময় খেয়ালও করে না। অপরাজিতার মুখে একটি কথা নাই, আধমরা মানুষের মত সে শিথিল হইয়া গিয়াছে। এক গ্লাস জল দিতে বলিলে সে যে নাড়িতেছে না সেটা দুষ্টামিও নয়, অবাধ্যতাও নয়, আলস্যও নয়। অ্যাপিসের পিয়ন কথা না শুনিলে জ্যোতিৰ্ম্ময় যেমন বিরক্ত হয়, অপরাজি তার উপর তার তেমনি বিরক্তি জাগে । নেহাৎ ভদ্রলোক বলিয়াই আপিসের পিয়নের মত বৌকে গালাগালি করে না, মৃদু অনুযোগ ও উপদেশ দিতে দিতে ঘুমাইয়া পড়ে। অপরাজিতার গা এলানো নিকবাক শিথিল ভাবটা জ্যোতিৰ্ম্ময় যে অসুস্থ দেহমনের দুৰ্ব্বলতার লক্ষণ বলিয়া চিনিতে পারে না, হয়তো তার আরও একটা কারণ আছে। মাঝে মাঝে আপরাজিতাও ক্ষেপিয়া যায়, কি অফুরন্তই মনে হয় সেদিন তার জীবনীশক্তি। গল গল করিয়া ক্রমাগত কথা বলিয়া যায়, অপরিমিত হাসে, প্ৰাণহীন জড়বস্তুর মত কেবল সোহাগ গ্রহণ করার বদলে সোহাগের বন্যায় &tÑ,