পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী আক্ৰমণ আরম্ভ করে । আমাদেৱ সংঘের বিরোধিতার উদ্দেশ্যে স্থাপিত “কংগ্রেস সাহিত্য সংঘ’ সক্রিয় হতে চেষ্টা করে। কিন্তু মৃত সংস্কৃতির জের টেনে প্রগতিশীল নূতন ও জীবন্ত সংস্কৃতির বিরোধিতায় নামার অর্থই, ভাব ও প্রেরণার অসীম দৈন্য-এই দৈন্য নিয়ে কোন সংঘ প্ৰাণবান ও সক্রিয় হতে পারে না । ‘কংগ্রেস সাহিত্যু সংঘ’ তাই বারবার মাথা তুলতে চেয়ে ঝিমিয়ে গিয়েছে। আমাদের সংঘ সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই আক্রমণের প্রতিরোধ করেছে“পরিচয়’ এবং অন্যান্য প্ৰগতিবাদী পত্রিকায় সাহায্যে এবং সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান প্রভৃতির আয়োজন করে। প্ৰগতিশীল মতবাদের প্রচারে “পরিচয়'-এর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রগতি-বিরোধী ধারা প্ৰবল হবার পর “পরিচয়-এর সম্পাদকীয় নীতির যে পরিবর্তন করা হয়, এবং যে দৃঢ়তার সঙ্গে এ নীতি অনুসরণ করা হয় তা বিশেষ অভিনন্দনের যোগ্য । বিরোধীপক্ষের প্রবল আক্রমণের বিরুদ্ধে আমাদের সংঘ প্রশংসনীয় দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে, কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে তুলবার সক্রিয় প্রচেষ্টা সম্পর্কে সংঘ সম্পূর্ণ সচেতন হতে পারেনি। বুর্জোয়া ভাবধারার মোহ সম্পূর্ণ কাটিয়ে উঠতে না পারায় ংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রগতির ধারা আজ কতদূর শক্তিশালী-সংঘের পুরোপুরি সে ধারণা জন্মায়নি, এবং এই শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রূপ দেবার দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা থেকে গিয়েছে। বর্তমান যুগে শ্রমিকশ্রেণী ও জনসাধারণের বিপ্লবী চেতনা যখন যতদূর অগ্রসর হয়, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রগতিশীল ধারার ততখানি শক্তিশালী হবার সম্ভাবনাও সেই সঙ্গে সৃষ্টি হয়ে যায় । বাংলার শিল্প সাহিত্যের ক্ষেত্রেও নূতন সংস্কৃতির দুর্বার জোয়ার আনার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়ে আছে বহুমুখী বিক্ষিপ্ত প্ৰগতিশীল ধারাগুলির মধ্যে । আমরাই গাফিলতি করে এতদিন ধারাগুলিকে একত্র করে জোয়ার সৃষ্টি করতে পারিনি । গত এক বৎসর প্রতিক্রিয়ার আক্রমণ, নিন্দ ও অপপ্রচারের স্তর অতিক্রম করে, প্ৰগতিশীল লেখক, শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের উপর সরকারী নিৰ্যাতনের স্তরে পৌচেছে। সংঘের বিশিষ্ট সভ্য শ্ৰীগোপাল হালদার, শ্ৰীহীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও শ্ৰীসুভাষ মুখোপাধ্যায় আজ বহুদিন বিনা বিচারে আটক হয়ে আছেন। সংঘের কেন্দ্রীয় আপিসে একাধিকবার পুলিসের পদাৰ্পণ ঘটেছে,