পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শৈলজ শিলা বলি, “ঘামাচি কই রে ? আমার আর ঘামাচি হয় না। দু-বেলা কত সাবান মাখি তা জানিস ?” খিলখিল করিয়া হাসিয়া শিলা বঁাচে এবং ইহার পর কয়েক দিন ধরিয়া সে আগের মতো হাসিখুশি হইয়া কাটায়। এই পরিবর্তন কিন্তু সাময়িক পরিবর্তনটাকে তাহার নিকটেও স্পষ্টতর করিয়া তোলে। তাহার শঙ্কা-সংকোচহীন জীবন প্রবাহ আবার অবাধে বহিতেছে দেখিয়া আমিও এদিকে বিমাইয়া পড়ি। হাই তুলিয়া মোড়ামুড়ি দিয়া ও মেয়েটার নারীত্ব যে আবার ঘুমাইয়া পড়ে, ইহা আমার ভালো 可忆引可11 আবার আমার অজস্ৰ সূক্ষ্ম ইঙ্গিতের পীড়ন চলে। হাসিখুশি মিলাইয়া গিয়া তাহার কপোল হয় পাণ্ডুর, চোখ করে ছলছল । এমনিভাবে দিন যায়, অবশেষে একদিন বর্ষা-ব্যাকুল দ্বিপ্রহরে আমার এই পুরু তামাকের ধোয়ায় বিবৰ্ণ ঠোঁট দিয়া শিলার হাসিখুসি চিরকালের জন্য মুছিয়া নিলাম। মনে করিয়াছিলাম ঘুমাইয়া আছে, কিন্তু দেখিলাম ধরা পড়িয়া গিয়াছি। “কি দাদু ?? বলিয়া ধড়মড় করিয়া উঠিয়া বসিল । কত কথাই বলিতে পারিতাম। দাদামশাই নাতনীর ঠোঁটে চুম্বন করিয়াছে, ইহার কত সঙ্গত ব্যাখ্যাই ছিল। চুম্বন যে লাভ রাইট-এর সভ্য সংস্করণ এ কথা আজও যে জানে না। দুই-চারিটা সস্নেহ বাণী বলিয়া কত সহজেই তাহাকে ভোলানো যাইত। কিন্তু সে সব কিছু না করিয়া আমি দিলাম ছুটি । ছুটিয়া রাস্তাৱ পড়িয়া হন হন করিয়া পুৱা দুই মাইল হঁটিয়া থামিলাম। পথের ধারে একটা নির্জন গাছতলায় দাড়াইয়া ভাবিতে লাগিলাম আর কত ঘণ্টা পরে বাড়ি ফেৱা চলিবে । হঠাৎ খেয়াল হইল একটি শীর্ণকায় বৃদ্ধ ভদ্রলোক দুই হাতের ভিতরে আসিয়া ভীষ্মদৃষ্টিতে আমার মুখে কি যেন খুজিতেছেন। ভালো করিয়া নজর করিতে बिनाम । “আপনি যে ! এখনো বেঁচে আছেন দেখছি। বলি, এবারও বিপদ নাকি ? এ কিন্তু লোকালয় মশাই!’ “আজেন্তু বিপদ নয়। সে বেঁচে আছে ? বলুন, সে বেঁচে আছে ? মাথা নাড়িয়া শূন্যে তুড়ি দিয়া বলিলাম, ‘বাঁচে কি ? আপনিই বলুন। মৃত্যুই ve