পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা 西引而柯而af河旧 ঘরের চারিদিকে চাহিয়া বলিল, “পরিচয় করার এত আগ্রহ কেন বলি। বাড়ীটার ভাড়াটে জুটছিল না । এরকম বাড়ী পছন্দ করার মত টেস্ট যাদের আছে, আর এত টাকা ভাড়া যারা দিতে পারে; তারা নিজেরাই বাড়ী তৈরী করে বাস করে। তাই একটু কৌতুহল হচ্ছিল, বাড়ীটা যিনি পছন্দ করে ভাড়া নিলেন, তিনি মানুষটা কেমন দেখে যাই।” ধীরে স্পষ্ট কথা, বেশ বুঝা যায় বক্তব্যকে নিখুত ও সম্পূর্ণভাবে প্ৰকাশ করাই তার অভ্যাস । মোহন জানে, এভাবে যারা কথা বলে তারা ধৈৰ্য্যশীল শান্ত প্ৰকৃতির মানুষ হয়। “বেশ বাড়ীটি আপনার। সকলের পছন্দ হয়েছে।” জগদানন্দ জিজ্ঞাসা করে, “জমি কেনা আছে নিশ্চয় ?” মোহন হাসিল ৷-“না। তবে কিনবার ইচ্ছা আছে।” জগদানন্দ হাসিমুখে মাথা হেলাইয়া সায় দিল, “তাহলে বছর খানেক থাকবেন আশা করা যায় ।” ধীরে ধীরে দু’জনের আলাপ চলিতে থাকে। পরিচয় গড়িয়া উঠিতে থাকে অত্যন্ত মন্থরগতিতে কিন্তু দৃঢ়ভাবে। একজন আরেকজনকে যতটুকু জানিতে পারে তার মধ্যে ফাকি থাকে না। মোহনের ভালই লাগে। তার অনেক কাজ ছিল, সেগুলি স্থগিত রাখিতে হইলেও মনে হয় না বাজে গল্পে সময় নষ্ট হইতেছে। মোহনের কলিকাতায় বাস করিতে আসাকে সমর্থন করিয়া জগদানন্দ বলে, “বেশ করেছেন। এসব ইচ্ছাকে হাঙ্গামা বা অসুবিধার ভয়ে দমন করতে নেই। গ্রামে থাকতে ভাল না লাগলে গ্রামে পড়ে থাকবার কোন মানে হয় না । তখন সহরে আসাই ভাল।” “গ্রামের ক্ষতি হয়।” ‘কেন ? আপনি চলে আসাতে গ্রামের কি ক্ষতি হয়েছে ? লোকে বলে শুনতে পাই শিক্ষিত আর ধনীরা গ্ৰাম ছেড়ে চলে আসে বলে গ্রামের আরও অবনতি হয়। আমি তার মানে বুঝতে পারি না ভাই। শিক্ষিত আর ধনীরা গ্রামে থেকে গ্রামের এতটুকু উন্নতি করে ? কোন দেশে করেছে ? শিক্ষিতেরা বেকার বসে থাকে, RSS