পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

खे•निबल उच्ने १७$ বলিয়া বসিয়া থাকিলে গৃহে গমন ঘটে না । গম্যস্থানকে যে ভালবাসে, পথকেও সে ভালবাসে ; পথ গম্যস্থানেরই অঙ্গ, অংশ এবং আরম্ভ বলিয়া গণ্য । ব্রহ্মকে যে চায়, ব্রহ্মের সংসারকে সে উপেক্ষা করিতে পারে না—সংসারকে সে প্রীতি করে এবং সংসারের কৰ্ম্মকে ব্রহ্মের কৰ্ম্ম বলিয়াই জানে । , আৰ্য্যধৰ্ম্মের বিশুদ্ধ আদর্শ হইতে র্যাহারা ভ্ৰষ্ট হইয়াছেন তাহারা বলিবেন সংসারের সহিত যদি ব্রহ্মের যোগ সাধন করিতে হয় তবে ব্রহ্মকে সংসারের উপযোগী করিয়া গড়িয়া লইতে হইবে । তাই যদি হইল তবে সত্যের প্রয়োজন কি ? সংসার ত আছেই—কাল্পনিক স্বাক্টর দ্বারা সেই সংসারেরই আয়তন বিস্তার করিয়া লাভ কি ? আমরা অসৎ সংসারে আছি বলিয়াই আমাদের সত্যের প্রয়োজন, আমরা সংসারী বলিয়াই সেই সংসারাতীত নির্বিবকার অক্ষর পুরুষের আদর্শ উজ্জ্বল করিয়া রাথিতে হইবে—সে অাদর্শ বিকৃত হইতে দিলেই তাহা সছিদ্র তরণীর ন্যায় আমাদিগকে বিনাশ হইতে উত্তীর্ণ হইতে দেয় না । যদি সত্যকে, জ্যোতিকে, অমৃতকে আমরা অসৎ, অন্ধকার এবং মৃত্যুর পরিমাপে থৰ্ব্ব করিয়া আনি, তবে কাহাকে ডাকিয়া কহিব আসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যোর্মামৃতং গময় ? সংসারী জীবের পক্ষে একটি মাত্র প্রার্থনা আছে—সে প্রার্থনা অসৎ হইতে আমাকে সত্যে লইয়া যাও, অন্ধকার হইতে আমাকে জ্যোতিতে লইয়া যাও, মৃত্যু হইতে আমাকে অমৃতে লইয়া যাও । সত্যকে মিথ্যা করিয়া লইয়া তাহার নিকট সত্যের জন্য ব্যাকুলতা প্রকাশ চলে না, জ্যোতিকে স্বেচ্ছাকৃত কল্পনার দ্বারা অন্ধকারে আচ্ছন্ন করিয়া তাহার নিকট আলোকের জন্য প্রার্থনা বিড়ম্বন মাত্র, অমৃতকে স্বহস্তে মৃত্যুধর্মের দ্বারা বিকৃত করিয়া তাহার নিকট অমৃতের প্রত্যাশা মূঢ়তা । ঈশাবাস্তমিদং সৰ্ব্বং ধংকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ—যে ব্রহ্ম সমস্ত জগতের সমস্ত পদার্থকে আচ্ছন্ন করিয়া বিরাজ করিতেছেন সংসারী সেই ব্ৰহ্মকেই সৰ্ব্বত্র অনুভব করিবেন উপনিষদের এই অনুশাসন । দ্বিধাগ্রস্ত ব্যক্তি বলিবেন, উপদেশ সত্য হইতে পারে কিন্তু তাহা পালন কঠিন । অরূপ ব্রহ্মের মধ্যে দুঃখ শোকের নির্বাপন সহজ নহে । কিন্তু যদি সহজ না হয় তবে দুঃখ নির্বাপনের, মুক্তি লাভের অন্য যে কোন উপায় আরও কঠিন—কঠিন কেন অসাধ্য। স্বতঃপ্রবাহিত অগাধ স্রোতস্বিনীর মধ্যে অবগাহন স্নান যদি কঠিন হয় তবে স্বহস্তে ক্ষুদ্রতম কূপ খনন করিয়া তাহার মধ্যে অবতরণ আরও কত কঠিন—তাই বা কেন, নিজের ক্ষুদ্র কলস-পরিমিত জল নদী হইতে বহন করিয়া স্নান করা সেও দুরূহতর । যখন ব্রহ্মকে অরূপ অনন্ত অনিৰ্ব্বচনীয় বলিয়া জানি তখনি তাহার মধ্যে সম্পূর্ণ আত্মবিসর্জন অতি সহজ হয়—তখনি তাহার দ্বারা পরিপূর্ণরূপে পরিবৃত &ግ