তাহা লইয়া ঘরে ঘরে বিবাদ বাধিয়া গেল। ব্রাহ্মদের ধোপাঁ নাপিত বন্ধ হইল। এমন কি মাঝি মাল্লারাও অনেক স্থলে তাহাদিগকে নৌকাতে তুলিতে ভয় পাইতে লাগিল। কিন্তু কিছুতেই ব্রাহ্মসমাজের শক্তিকে খৰ্ব্ব করিতে পারিল না। এই সকল আন্দোলনের মধ্যে ঢাকায় নূতন উপাসনা মন্দির নিৰ্ম্মিত হইল, এবং ১৮৬৯ সালের শেষভাগে কেশবচন্দ্র সেন মহাশয় গিয়া সেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করিলেন।
১৮৬০ হইতে ১৮৬৯ সালের মধ্যে ঢাকাতে যেমন এক দিকে ব্রাহ্মসমাজের অভু্যদয় হইয়া ধৰ্ম্মান্দোলন উপস্থিত হইল, তেমনি সৰ্ব্ববিধ সমাজ-সংস্কার কার্য্যে উৎসাহ দৃষ্ট হইতে লাগিল। কলিকাতার সোমপ্রকাশের ন্যায় “ঢাকা প্রকাশ” নামক সাপ্তাহিক পত্র প্রকাশিত হইয়া গোবিন্দপ্রসাদ রায় নামক একজন উদারচেতা ব্যক্তির হস্তে ন্তস্ত হইল। তিনি উন্নতি-শীল দলের মুখপাত্র স্বরূপ হইয়া ইহাতে সৰ্ব্ববিধ অগ্রসর মত প্রকাশ করিতে লাগিলেন। কেশবচন্দ্রের আবির্ভাব, ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গত, ব্রাহ্ম যুবকদিগের সাহসিকতা, এই সকলে প্রাচীন হিন্দুসমাজকে জাগাইয়া তুলিল। হিন্দুধৰ্ম্মের রক্ষার জন্য হিন্দুধৰ্ম্ম রক্ষণী সভা, ও “হিন্দু হিতৈষিণী” নামক সাপ্তাহিক কাগজ বাহির হইল। একদিকে “ঢাকা প্রকাশ” অপরদিকে হিন্দু হিতৈৰিণী এই উভয় পত্রে পূর্ববঙ্গবাসীদিগকে সজাগ করিয়া তুলিল।
এই কালের মধ্যে আর এক ব্যক্তি পূৰ্ব্ব-বঙ্গসমাজকে বিশেষরূপে আন্দোলিত করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। তাছার নাম রাসবিহারী মুখোপাধ্যার। ইনি কৌলীন্ত ও বৃহবিবাহপ্রথার উন্মুলনের জন্ত বদ্ধপরিকর হইয়া মহা সংগ্রাম করিয়াছিলেন। ইহার জীবনেয় সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই;–
রাসবিহারী মুখোপাধ্যায়।
১২৩২ বঙ্গাৰে বিক্রমপুরের অন্তর্গত তারপাশা গ্রামে রাসবিহারী মুখেপাধ্যায়ের জন্ম হয়। অতি শৈশবেই ইনি পিতৃহীন হইয়। স্বীয় পিতৃব্যের আশ্রয়ে বৰ্দ্ধিত হন। বিদ্যা শিক্ষার ভাল বন্দোবস্ত না হওয়াতে ইংরাজী শিক্ষা দূরে থাকুক, বাঙ্গালা শিক্ষাও ভাল হয় নাই। ইহার পিতৃব্যও বোধ হয় সম্পন্ন অবস্থার লোক ছিলেন না; তিনি দারিদ্রোর তাড়নায়, স্বীয় কোলীতের সাহায্যে ল্লাতুম্পুত্রকে ৮টা কুলীন কন্যার সহিত পরিণীত করেন। ক্ৰিয়ংকাল পরে কিঞ্চিৎ ঋঞ্চভার মস্তকে লইয়া রাসবিহারীকে স্বীয় পিতৃৰ্য