পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
২৯

যুবতী এদিকে ওদিকে চাহিয়া পাখার হ্যাণ্ডেলের প্রান্তস্থিত একটি স্প্রিং টিপিলেন, আর তৎক্ষণাৎ হ্যাণ্ডেল-মধ্যস্থিত গুপ্ত আধারের ডালা খুলিয়া গেল; তখন যুবতী সেই গুপ্ত আধারে একছড়া মহামুল্য হীরক হার লুকাইয়া রাখিয়া তাহার ডালা বদ্ধ করিলেন। এ কাণ্ড চক্ষুর নিমিষে ঘটিল। যুবতী তাহার পর পাখা ঘুরাইতে ঘুরাইতে নাচের মজলিশে প্রবেশ করিলেন। যুবক যে লুকাইয়া এই কাণ্ড দেখিয়াছে,—তাহা তিনি বুঝিতে পারিলেন না।

 “যুবকটি প্রথমে মনে করিয়াছিল, এই হীরক-হার যুবতীর নিজস্ব সম্পত্তি, লোকের ভীড়ে খোয়া যাইবার ভয়ে তিনি তাহা পাখার মধ্যে লুকাইয়া রাখিলেন। যুবক, আর্থিক অসচ্ছলতায় এতই কষ্ট পাইতেছিল যে, সেই হীরক-হারটি কোনও কৌশলে আত্মসাৎ করিবার জন্য বড়ই ব্যাকুল হইয়া উঠিল, এবং কি কৌশলে তাহা হস্তগত করিবে, তাহাই ভাবিতে লাগিল; সে যুবতীর গতিবিধির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখি,—ইতিমধ্যে এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিল।

 “সেই নাচের মজলিসে যাঁহারা নিমন্ত্রিত হইয়া আসিয়াছিলেন তাঁহাদের মধ্যে কোনও সম্রান্ত রাজ-কর্মচারীর পত্নীও ছিলেন, তাঁহার মহামূল্য হীরক-হার গোলমালে হারাইয়া গিয়াছে, এইরূপ একটা কথা যুবকের কর্ণে প্রবেশ করিল। যুবক তখন বুঝিতে পারি, উক্ত যুবতীই সেই হার চুরী করিয়া এই ভাবে লুকাইয়া রাখিয়াছেন। যাহা হউক, বিস্তর অনুসন্ধানেও সেই হার পাওয়া গেল না, অগত্যা পুলিশে সংবাদ দেওয়া হইল। কিন্তু পুলিশ যে সেই যুবতীকে সন্দেহ করিবে, বা হারের সন্ধান পাইবে, যুবক মুহূর্ত্তের জন্যও ইহা বিশ্বাস—করিতে পারিল না।

 “যুবতীর অদ্ভুত কৌশল ও বুদ্ধির প্রাখর্য্যের পরিচয় পাইয়া সেই