পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

回 -- থাকেন যে, জড় ও লিছাৎ এক বিযয়ে পরস্পরের সমধম্মী—তাহাদের গতির সীমা আছে । কিন্তু আলোর বেলা এ-কথা তেমন সহজ নহে ৷ এক স্থান হইতে অন্য স্থানে যাইতে হইলে আগের ও যে সময়েল পয়োজন হয়, তাহা অামাদের সাধারণ অভিজ্ঞতার অন্তর্গত নহে। বিদ্যুৎ চমকাইয়া মুহূর্বের মধ্যে দশ দিক উজ্জল হয়। উঠিল। বিদ্যুৎ চমূকান ও দশ দিক উজ্জল হইয়। উঠার মধ্যে সময়ের বাবধান আমরা ধরিতে পারি কি ? অামাদের চোথ অন্তত: এই দুইটি ব্যাপারকে একই সময়ে প্রত্যক্ষ করিয়া থাকে। আমাদের এইরূপ অভিজ্ঞতা হইতে আমরা দুই রকম সিদ্ধান্তে পৌছিতে পারি। প্রথমতঃ, আলোর গতির কোন সীমা নাই । ঘে মুহূর্তে আলো আমরা জালি, সেই মূহুর্তেই চতুর্দিক আলোকিত হইয় উঠে—ইহাব জনা সময়ের কোনও প্রয়োজন হয় না। জড় বা বিড়াতের মত সে সময়ের অধীন হইয়া এ সংসালে জন্ম লয় নাই। দ্বিতীয়তঃ, আলো জড় বস্তু প। বিছাতের মতই সময়ের অধীন, তবে তাহার গতিবেগ এত ক্ষিপ্ৰ যে, এই পৃথিবীতে স্থানের যে পরিমাণ ব্যবধান আমাদের অাছে, তাহা আলোর নিকট বাবধানই নহে। এই বাবধান অতিক্রম করিতে তাহার সময় এত অল্প লাগে যে, আমরা সাধারণতঃ তাহ উপলব্ধি করিতে পারি না। অতএব এই সমস্তার সমাধানের উপায় কি ! গ্যালিলিওর নাম তোমরা শুনিয়াছ । ইনিই প্রথমে দূরবীণ আবিষ্কার করিয়া পুথিবীকে উপহার দিয়াছিলেন। ইনি বহু চেষ্টা করিয়াও আলোকের গতি আবিষ্কার করিতে পারেন নাই। তাই সে যুগের শীর্ষস্থানীয় গণিতবিৎ ও বৈজ্ঞানিক দে কাৰ্ত্তে (Descartes)আলোর গতি অসীম বলিয়াই স্থির করিয়া লইয়। পদার্থ-বিজ্ঞানের একটা অপরূপ দর্শনই গড়িয়া ফেলিয়াছিলেন। র্তাহার মত অস্তুতকৰ্ম্ম গণিতবিদের মতের সমর্থনকারীদের ংখ্যার কথনও অভাব হয় না, তাই ক্রমে ক্রমে র্তাহার সিদ্ধান্তই শেষ পৰ্য্যস্ত বৈজ্ঞানিক-মহলে সত্য বলিয়া গৃহীত হইতে তেমন আর আপত্তি দেখা গেল না। এমন সময়ে এক অভাবনীয় ভাবে এবং সম্পূর্ণ অচিন্তিত-পূর্ব উপায়ে প্রমাণ হইয়া গেল যে, আলোকেরও গতি অাছে এবং তাঁহা জড়বস্তু এবং ৰিছতের গতির মতই সময়ের অধীন। পৃথিবীর দূরত্বকে আলো অবজ্ঞা করিয়া নিমেষ না ফেলিতে ফেলিতে ছাড়াইয়া যায়, কিন্তু বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবী ছাড়া কি - حمام هم- ۹:etes-serageمح۴-مم আর কিছুই নাই ? গ্ৰহগণ, স্বর্য, নক্ষত্র এদের পরম্পরের বাবধানকেও কি আলোক তেমনিভাবে অবজ্ঞা করিতে পারে ? গালিলিও এক পাহাড়ের শিখর হইতে আলো ফেলিয়া পাচ মাইল দূরের অন্য এক পাহাড়ের শিখরে চলিয়া যাইতে তাহার কত সময় লাগে, তাহ নিৰ্দ্ধারণ করিতে গিয়া কোনও ফল পান নাই। কিন্তু যে দূরত্বের বাবধান শুধু দশ মাইল নহে, কোটা কে’টা মাইল, তাছাকে অতিক্রম করিতেও কি আলো কান্ত হইবে না ? অাকাশে বিছাৎ চম্কাইলে পৃথিবী আলোকিত হইয় উঠে । এই দুহটি ব্যাপার একই সময়ে ঘটিয়া পাকে, এইরূপই আমরা দেখিতে পাই। বিষ্ঠাৎ আকাশে না চমক হয়। যদি স্বর্গ্যে চমকাইত এবং সেই স্বল্য-পিঠের লিঙ্কাতের আলোতে মঙ্গল, শনি, রহস্পতি ইত্যাদি গ্রহ উজ্জল হইয়া উঠিতেছে আমলা দেখিতে পাইতাম, তাহা হইলে হয়ত আলোকের গতির পরিমাপ করা অামাদের পক্ষে সম্ভব ছিল । কিন্তু স্বর্যা নিজেই এত তীব্রভাবে উজ্জল যে, তাহার পিঠে বিস্থাৎ চমকাইয়া উঠিতে দেখিতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এই চমকে গ্রহদের উজ্জল হইয়। উঠিতে দেখিয়া, এই দুইটি ব্যাপারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান আছে কি না, তাতার পরিমাপ করা ত ঢের দুরের কথা। ঠিক এই উপায়ে সব না হইলেও ঐ স্থর্যা, ঐ গ্রহ এবং তাছাদের উপগ্ৰহরই আলোর গতির এই চিরন্তন রহস্তের চাবিটি মানুষকে সৰ্ব্বপ্রথমে উপহার দেয়। কিরূপে ইহা সম্ভব হইল, তাহারই গল্প তোমাদের এইবার বলিতেছি । গালিলিও ১৬০৯ খৃষ্টাব্দে প্রথমে দূরবীণ আবিষ্কার করেন। তাহার পর ক্রমে ক্রমে তাঙ্কা ইয়োরোপের বড় বড় মানমন্দিরগুলিতে ছড়াইয়া পড়ে। জ্যোতিবিদগণের তখন দূরবীণ দিয়া নক্ষত্র, গ্ৰহউপগ্ৰহাদি পৰ্য্যবেক্ষণ করাই প্রধান কাজ হইয়া দাড়াইল । ফ্রান্স দেশের রাজধানী প্যারী নগরে প্রাচীন সময় হস্ততেই একটি মানমন্দিব বর্তমান ছিল। এই মানমন্দিরটিও আকাশের সব ব্যাপার নিরীক্ষণ করিবার জন্য একটা দূরবীণ সংগ্ৰহ করিল। এখানে সে সময়ে একজন খুব ভাল জ্যোতিৰ্ব্বিদ গবেষণায় নিযুক্ত ছিলেন। তাহার নাম ছিল ওলাফ রোয়েমার (Olaf Romer) । তাহার কাজ ছিল গ্ৰহগুলি ও তাদের চাদকে তার দূরবীণ দিয়া খুব ভাল করিয়া পৰ্য্যবেক্ষণ করা। এই ভাবে দুই তিনটি গ্রহকে দেখা শেষ করিয়া প্রায় ১৬৭৫ খৃষ্টাব্দে তিনি বৃহস্পতি >8s •