পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ * শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত । [ ১৮৮২ মার্চ । লোকেরা কত কি বলে । কিন্তু দ্যাখ, হাতী যখন চলে যায়, পেছনে কত জানোয়ার কত রকম চীৎকার করে । কিন্তু হাতী ফিরেও চায় না । তোকে যদি কেউ নিন্দ করে, তুই কি মনে ক’রবি ? নরেন্দ্র। আমি মনে করব, কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে। ঐরামকৃষ্ণ (সহাস্তে ) ৷ না রে অতো দূর নয় । ( সকলের হাস্য ঈশ্বর সৰ্ব্বভূতে আছেন। তবে ভাল লোকের সঙ্গে মাখামাখি চলে, মন্দ লোকের কাছ থেকে তফাৎ থাকতে হয় । বাঘের ভিতরও নারায়ণ আছেন ; ত} বলে বাঘকে আলিঙ্গন করা চলে না । ( সকলের হাস্ত )। যদি বল বাঘ তো নারায়ণ, তবে কেন পালাবো। তার উত্তর এই যে, যারা বলছে ‘পালিয়ে এসো’, তারাও নারায়ণ, তাদের কথা কেন না শুনি । “একটা গল্প শোন। কোন এক বনে একটি সাধু থাকে। তার অনেকগুলি শিন্ত । তিনি একদিন শিষ্যদের উপদেশ দিলেন যে, সৰ্ব্বভূতে নারায়ণ আছেন, এইট জেনে সকলকে নমস্কার করবে । একদিন একটা শিষ্য হোমের জন্য কাঠ আনতে বনে গিছলো। এমন সময়ে একটা রব উঠলো, ‘কে কোথায় আছ পালাও—একটা পাগল হাতী যাচ্ছে!” সবাই পালিয়ে গেল, কিন্তু শিষ্ট পালাল না । সে জানে যে, হাতীও যে নারায়ণ, তবে কেন পালাব ? এই ব’লে দাড়িয়ে রইল ; আর নমস্কার ক’রে স্তব স্তুতি ক’বৃতে লাগলো ; এ দিকে মাহুত চেচিয়ে বলছে, ‘পালাও’ পালাও । শিম্ভটি তবুও নড়ল না। শেষে হাতীটা শুড়ে ক’রে তুলে নিয়ে তাকে এক ধারে ছুড়ে ফেলে দিয়ে চ’লে গেল। শিষ্য ক্ষতবিক্ষত হ’য়ে ও ਬੇਲਗੂ হ’য়ে পড়ে ब्रहेण । - “এই সংবাদ পেয়ে গুরু ও অন্যান্য শিষ্যরা তাকে আশ্রমে ধরাধরি ক’রে নিয়ে গেল। আর ঔষধ দিতে লাগলো। খানিক ক্ষণ পরে চেতনা হ’লে ওকে কেউ জিজ্ঞাসা ক’লে, “তুমি কেন হাতী আসছে শুনেও চলে গেলে না ? সে ব’লে, ‘গুরুদেব যে আমায় ব’লে দিছলেন যে, নারায়ণই মানুষ জীব জন্তু সব হয়েছেন। তাই আমি হাতী নারায়ণ আসছে দেখে সেখান থেকে সরে যাই নাই। গুরু তখন বরেন বাবা, হাতী নারায়ণ আসছিলেন বটে, তা সত্য ; কিন্তু বাবা; মাহুত লাৱাৰয়ণ তো তোমায় বারণ ক’রেছিলেন । যদি সবই নারায়ণ, তবে তার কথা বিশ্বাস ক’লে না কেন ? মাহুত, নারায়ণের কথাও শুনতে হয় । (সকলের হাস্ত )। . . . .