পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So 8 ভৌগোলিক বৃত্তান্ত । [ ১ম ভাঃ ৯ম অঃ — মাইল উদ্ধে উঠিতে হয়। অৰ্দ্ধ পথেই রূপনাথের কুটার, তদুপরি গুহা । গুহাভ্যন্তর গাঢ় তিমিরে চির সমাচ্ছন্ন। আলোক ব্যতীত গুহ্যদর্শনার্থীর পাদগদ্ধ অগ্রসর হইবার ক্ষমতা নাই । খসিয়ার আলোক ও পথ প্রদর্শন কার্য্যে যাত্রীদের সহায়তা করে । ( এখানে কোনরূপ পাণ্ডার উৎপাত নাই, কিছু পারিশ্রমিক দিলে খাসিয়ারাই দ্রষ্টব্য স্থানগুলি দেখাইয়া দেয় । ) প্রতি সোমবারে জয়ন্তীপুর হইতে ব্রাহ্মণ গিয়া রূপনাথের পূজাৰ্চা করিয়া থাকেন । গুহাটিকে অন্ধকারের বিশ্রমাগার বলা যাইতে পারে ; ভূগর্ভের অন্ধকার—সে চিরসঞ্চিত অন্ধকার মানব কল্পনার অতীত। প্রদীপ্ত আলোক যোগে সেই গভীর তমোরাশি মথিত করিয়া, সস্তপণে ধীরে ধীরে, অল্প একটু অগ্রসর হইলেই, দর্শকের দৃষ্টি উৰ্দ্ধদিকে একটি বিস্তৃত ঝালরের উপর হঠাৎ পতিত হয়। অতি সুরম্য প্রজলৎ কিংখাপের ঝালরের মত শূন্যে ঝুলিতেছে। বুদ্ধিমান পাঠককে বুঝাইতে হইবে না যে, এ ঝালর প্রস্তর ব্যতীত আর কিছুই নহে ; আকৃত্রিম—স্বাভাবিক আর্দ্র প্রস্তর খণ্ড বিস্তৃত রহিয়াছে, তাহার উপর আলোকের প্রভা প্রতিফলিত হইলে নয়নরঞ্জন বস্ত্র ঝালরবৎ প্রতীয়মাণ হয় । বস্ত্র ঝালর পার হইয়া গুহাভ্যস্তরে কিঞ্চৎ অগ্রসর হইলে, চতুষ্পার্শ্বে শিবলিঙ্গাকার অগণ্য প্রস্তর রাজি বিরাজিত রহিয়াছে দৃষ্ট হয় ; কত যে শিবলিঙ্গ, তার সংখ্যা নাই। যদি এখন চন্তন্তীয়–ভক্তিভাবোদ্দীপক কিছু থাকে, তবে তাহা এই শিবলিঙ্গ সমূহ। এত অগণ্য শিবলিঙ্গ কে জানে কখন কি উদ্দেশ্বে স্বল্প হইয়াছিল ? এমন অনেক শিবলিঙ্গ দৃষ্ট হয় যাহার শীর্ষ দেশ হইতে অল্পে অল্পে অনবরত জলকণা নিঃস্থত হইতেছে। হাত দিয়া মুছিয়া দাও, দেখিতে দেখিতে আবার জল নির্গত হইবে । আরও কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইলে "নক্ষত্র মণ্ডল" দৃষ্টি গোচর হয়। নক্ষত্র মণ্ডল প্রকৃতই শোভার ভাণ্ডার। এমন মনোরঞ্জন – এমন মনোজ্ঞ, এমন তৃপ্তিপ্রদ ও সুখদ দৃশ্বে কাহার না বিস্ময় উৎপাদিত হয় ? মস্তক উত্তোলন করিলেই সহস্ৰ সহস্ৰ নক্ষত্র উদ্ধে জলিতেছে দেখিতে পাওয়া যায়। উপরে