পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম অধ্যায় । ] তরফের কথা । У o a মিনার পুত্রদ্বয় সুশিক্ষিত ও মিষ্টভাষী ছিলেন ; তন্মধ্যে ক্রিঞ্জিয়া অতি ধীর প্রকৃতি ও পরোপকারী ছিলেন ; তাহার মধুর ব্যবহার ও আলাপে মুহূৰ্ত্ত মধ্যে যে কোনও লোক র্তাহার বশীভূত হইয় পড়িত। র্তাহাদের সদ্ব্যবহারে অনতিবিলম্বেই আদমের মনোমালিন্য দূর হইয়া উভয় পক্ষে সৌহৃদ্য সংস্থাপিত হয়। ইহাতে দেশে শান্তি স্থাপিত হওয়ায়, দেশবাসী পরম সুখে কালযাপন করে। এই সময় ইউনসের মৃত্যু হওয়ায় ক্রিঞ্জিয়া অতিশয় বিষাদিত হন ; কিন্তু আদিম সহোদর-প্রেমের স্থলবত্তী হওয়ায়, সেই দারুণ শোক কথঞ্চিং প্রশমিত হয়। তরফে তখন নামে মাত্র দুইটি বিভাগ ছিল। আদম ও ক্রিঞ্জিয়া যথাক্রমে আহমদ ও মোহাম্মদ কুদ্দুস নামে এক এক পুত্র রাখিয়া পরলোক গমন করেন । আহমদ নিতান্ত বিলাসপরায়ণ ছিলেন । মোহাম্মদের সে দোষ না থাকিলেও তিনি অযথা দাম্ভিকতা প্রকাশ করিতেন । আহমদ, ফতা ও হেদায়েত উল্লা নামে দুই পুত্র রাখিয়া পরলোক গমন করেন ; মোহাম্মদের একমাত্র পুত্রের নাম মোহাম্মদ আলাউদ্দীন। আহমদের পুত্রদ্বয়ের মধ্যে ফতা অতি বুদ্ধিমান ও চতুর ছিলেন, তিনি কনিষ্ঠ বৈমাত্রেয় ভ্রাতা হেদায়েত উল্লাকে প্রীতির চক্ষে দেখিতেন না । জ্যেষ্ঠতাত তনয় আলাউদ্দীনের প্রতিও তাহার অনুরাগ ছিল না । কিন্তু “তরফদার” আলাউদ্দীন নয় আনির মালীক, তিনি হেদায়েত উল্লার সহায় হইলে হেদায়েতকে তাহার ন্যায্য অংশ হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না, এই দুরভিসন্ধি ও স্বার্থকুরোধে তিনি মনোভাব গোপন রাখিয়া আলাউদ্দীনের আনুগত্য স্বীকার করিতে লাগিলেন। অনতিবিলম্বে আলাউদ্দীন তাহার একান্ত বাধ হইয়া পড়িলেন; কৌশলের অভিপ্রায় সিদ্ধ হইল। তখন ফতা নিজ মূৰ্ত্তি ধারণ করিলেন, বিবিধ ষড়যন্ত্রে, নানা কৌশলজাল বিস্তার করিয়া, বৈমাত্রেয় ভ্রাতা, অপরিণত বয়স্ক বালক হেদায়েত উল্লাকে পৈতৃক বাসভূমি হইতে বিতাড়িত করিলেন ! যে সম্পত্তি কেহ সঙ্গে আনে না, সঙ্গেও নিতে পারে না ; সেই সম্পত্তি ভোগের মোহ-মদিরা মানুষকে এইরূপই কুটিল, কৌশলী ও নরপশুতে পরিণত করে। হেদায়েত উল্লা নিরুপায় হইয়া পড়িলেন। পরে পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার প্রাপ্তির জন্য দিল্লীতে অভিযোগ করেন ও স্বীয় অংশ প্রাপ্ত হন। স্বচতুর ফত