পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৬ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড কাকুরা গ্রামে প্রসিদ্ধ চৌধুরী বংশীয়ের বাস; আমরা ইহাদের বংশকথা প্রাপ্ত হই নাই। এই বংশ তথাকার প্রাচীন বংশ বলিয়া খ্যাত; ইহারাই তত্ৰত্য ভূম্যধিকারী। এই বংশের কৃষ্ণজীবন রায় চৌধুরী একজন সমৃদ্ধ ও প্রতাপশালী মিরাশদার ছিলেন। ইহার পুত্রের নাম দেবীপ্রসাদ রায় চৌধুরী। দেবীপ্রসাদ পশ্চিমাঞ্চলে গমন করিয়াছিলেন এবং ইন্দোর রাজ্যে কিছুকাল অবস্থিতি করিয়া তথায় ইংরেজী ভাষা শিক্ষা করেন, শ্রীহট্ট জিলায় ইনি সৰ্ব্বপ্রথম ইংরেজী শিক্ষিত ব্যক্তি বলিয়া অনুমিত হন। ইন্দোর হইতে দেশে আসিয়া তিনি কাছাড়ে গবর্ণমেণ্টের একটি কার্য্যে (হেডক্লার্ক পদে) নিযুক্ত হন (১৮৩৪ খৃঃ); কিছুদিন কাৰ্য্য করিয়া পেনশন গ্রহণে বাড়ী আসেন। দেবীপ্রসাদ যথেষ্ট উপাৰ্জ্জন করিলেও অপরিমিত ব্যয়ী ব্যক্তি ছিলেন; এজন্য তাঁহাকে পৈতৃক সম্পত্তির বহুলাংশ বিক্রয় করিতে হয়; ইহার পুত্র শ্রীহট্টের সুসন্তান প্রথিতনামা রাধানাথ চৌধুরী। ৪র্থ ভাগে আমরা তাহার গৌরবময় জীবনচরিত প্রদান করিব। ব্রাহ্মণদের বংশ-কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৭ম অধ্যায়ে ইটার পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মনন্দ ভট্টাচার্যের কথা কিঞ্চিৎ বলা গিয়াছে। একখানা প্রাচীন "পাতুড়া" কাগজে দৃষ্ট হয় যে ইহার বাচস্পতি উপাধি ছিল এবং জয়তার নামী এক “গুণবতী সতী” তাহার সহধৰ্ম্মিনী ছিলেন। আরও জানা যায় যে, ইটারাজ কর্তৃক তিনি স্ব “গোষ্ঠী” হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া ইটা পরগণার দাসের মহলবাসী, হুগলী হইতে আগত হালদার উপাধি বিশিষ্ট জনৈক প্রদান ব্যক্তিকে প্রথমেই যাজন করেন ।১৯ একদিন উক্ত হালদার তাহাকে স্বীয় দামোদর চক্রের অচ্চনা করিতে অনুরোধ করিলে, তিনি ক্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে অভিশাপ প্রদানান্তর পরিত্যাগ করেন। ব্ৰহ্মনদের ঈশান, লম্বোদর, বুড়ঙ্গ ও দৈত্যারি নামে চারিপুত্র এবং ইন্দ্ৰবতী নামে এক কন্যা ছিলেন । ব্ৰহ্মানন্দ ইন্দ্রবতীকে হংসখলার গৌতম গোত্রীয় দিগম্বর চক্রবত্তীর নিকট বিবাহ দেন । ইহার শ্রীনিবাস বাচস্পতি নামে এক পুত্র হয়, হরিহর ও দুর্গাদাস নামে বংশ প্ৰবৰ্ত্তক ভ্রাতৃদ্বয় ইহারই দুই পুত্রের নাম । ব্ৰহ্মানন্দের জ্যেষ্ঠ তনয় ঈশান, ইটার রাজকৰ্ম্মচারী নারায়ণ মণ্ডলের পৌরোহিত্য গ্রহণে ইন্দানগর বাসী হইয়াছিলেন।২০ বুড়ঙ্গ দিনারপুর পরগণার আমুদপুরে এক ব্রাহ্মণ কন্যা বিবাহ করিয়া সেইস্থানে গমন করেন ২১ দৈত্যারি নিঃসন্তান ছিলেন। লম্বোদরের ছয়পুত্র হয়, ইহাদের নাম রাম, নারায়ণ, সনাতন, বলরাম, নয়ন ও বংশী । সৰ্ব্বকনিষ্ঠ বংশীবদন ন্যায়রত্ন ব্যতীত ইহাদের সকলেরই বংশ আছে। নারায়ণ প্রথম হইতেই ঢাকাদক্ষিণ বাসী হন। তাহার বংশীয়গণ তথায় আছেন ॥২২ রাম ও বলরাম পঞ্চখণ্ড বাসী হন, কিন্তু বলরাম বংশীয়গণ প্রায় শত বৎসর যাবৎ লাতুবাসী হইয়াছেন। নয়নের বংশধর বর্গ শাহবাজপুর পরগণা বাসী । এস্থলে পঞ্চখণ্ড ও শাহবাজপুরের বংশ সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ কথিত হইতেছে। ১৯. এই বংশীয়গণ এখনও তথায় বাস করিতেছেন। ২০. ঐ বংশীয়গণ এখনও তথায় বাস করিতেছেন। ২১. ঐ বংশীয়গণ এখনও তথায় বাস করিতেছেন। ২২. ইহার মহেশ ভট্টাচাৰ্য্য, হরিনাথ চক্ৰবৰ্ত্ত ও কিশাইরাম ভট্টাচাৰ্য প্রভৃতি পাঁচ পুত্র ছিলেন। হরিনাথের নামীয় নবাব প্রদত্ত ভূমি, পরে “২১১ নং হরিনাথ পং” নামীয় তালুকে বন্দোবস্ত হয়।