পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন বৃত্তান্ত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৪১ এবং বাজার প্রভৃতি) ত্যাগ করেন। অনেক মহালই রাজস্ব বাকিতে এবং কোন কোন মহাল “বিপ্লবী” ব্যক্তিবর্গের চক্রে হস্তান্তর গিয়াছে। এই আখড়াতে ব্রাহ্মণ ব্যতীত অন্য জাতীয় কেহ অধিকারী হইতে পারেন না; আখড়ার অনেক ব্রাহ্মণ ও ভদ্র শিয্য ছিলেন ও আছেন। ঠাকুর শান্তরামের শিষ্য জয়গোবিন্দ ও ঠাকুর দয়াল, তাহার শিষ্য ধৰ্ম্মদাস (ঠাকুর ধনঞ্জয়), নিতাই চাদ, ইহার শিষ্য শ্রীযুক্ত রত্নগোবিন্দ অধিকারী এক অতি প্রবীণ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি । শাহ আব্দুল আলা চরিত ইহার নিবাসস্থান শ্রীহট্ট এবং সাধনস্থান সুবর্ণগ্রাম। “মোগড়া পাড়া গ্রামের উত্তরাংশে গোহাটা মহল্লায় সুপ্রসিদ্ধ পীর শাহ আব্দুল আলার সমাধি পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। ইনি পোকাই দেওয়ান নামে পরিচিত। কথিত আছে ইনি সংসারাশ্রম পরিত্যাগপূৰ্ব্বক দ্বাদশ বৎসর কাল নিবিড় অরণ্য মধ্যে ধ্যানে নিমগ্ন ছিলেন। এই সময়ে ইহার বাহ্যজ্ঞান রহিত হইয়াছিল; এমনকি, আহারাদির জন্যও ইনি কোনও সময়ে ধ্যানভঙ্গ করেন নাই। ইহার অনুচরবর্গ এই পরমযোগী মহাপুরুষের অন্বেষণে বহুস্থান পরিভ্রমণ করিয়া অবশেষে এই স্থানে ইহাকে একটী উইর টিপিমধ্যে ধ্যানমগ্নাবস্থায় প্রাপ্ত হয়। ইনি সম্ভবতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে আবির্ভূত হইয়াছিলেন। কারণ ১৮৬৪ সনে সুবর্ণগ্রামে এরূপ বয়োবৃদ্ধ লোক বিদ্যমান ছিলেন যাহারা এই মহাপুরুষের পুত্র শাহ ইমাম বক্স বা চুলুমিঞাকে তথায় জীবিতাবস্থায় দর্শন করিয়াছিলেন। চুলুমিঞা বৃদ্ধ বয়সে শ্রীহট্ট হইতে পিতার সমাধিস্থান পরিদর্শন করিতে এখানে আগমন করেন এবং কতিপয় বৎসর এখানে বাস করিয়া মানবলীলা সম্বরণ করেন। পিতা পুত্রের সমাধি একই স্থানে পাশাপাশি ভাবে রহিয়াছে। J.A.S.B. 1874 Pt. I." (শ্ৰীযুক্ত যতীন্দ্রমোহন রায় প্রণীত ঢাকার ইতিহাস প্রথম খণ্ড) শাহ জলাল শাহ জলাল মোসলমান ধৰ্ম্মজগতে অতি উচ্চ অধিকারী এবং অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন একজন প্রধানতম দরবেশ ছিলেন; ইহার জীবনচরিত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাঃ ২য় খঃ ২য় অধ্যায়ে বিস্তারিতরূপে বর্ণিত হইয়াছে। এস্থানে পুনরুল্লেখ নিম্প্রয়োজন। শাহ পাতা হযরত শাহ জলাল শ্রীহট্ট আগমনের অল্প পরে শাহপাতা শাহ জলালের যশঃ গৌরব শ্রবণে এদেশে আগমনপূৰ্ব্বক পং ভাদেশ্বরের অন্তর্গত দক্ষিণভাগে বাস করেন। তৎকালে তদঞ্চল জঙ্গল পুরিত ছিল, কদাচিৎ তিনি জঙ্গল হইতে বহির্গত হইয়া জেলেদের পল্লীর নিকটবৰ্ত্তী বাজারে আসিতেন। ঐ জেলে পাড়ায় এক “চণ্ডী" জাতীয়া জেলেনী তদীয় ভিক্ষাজীবী দরিদ্র স্বামীকে নানা যন্ত্রণা দিত, যেদিন স্বামী সেই বিরলবসতি স্থানে ভিক্ষা না পাইয়া রিক্তহস্তে ফিরিত, জেলেনী সেইদিন ক্রুদ্ধা ব্যাঘ্রীর ন্যায় ভিক্ষাজীবী যুবককে আক্রমণ করিয়া প্রহারে জর্জরিত করিত। রক্তমাংসের শরীর তো, কত সহে একদিন স্ত্রী কর্তৃক প্রহৃত হইয়া যুবক নিজ মনে ধিক্‌কৃত