পাতা:স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান - সুন্দরীমোহন দাস.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জলজনিত ম্যালেরিয়া । করিয়াছেন। মান্দ্রাজের বেটিংটন বলেন তথাকার কতিপয় গ্রামে জন্বরের প্রাদুর্ভাব ছিল, কতিপয় গ্রামে ছিল না। পানীয় জলের ব্যবস্থা ব্যতীত অন্য সমুদয় বিষয়ে এই গ্রাম সমূহ সমভাবাপন্ন ছিল । জারপ্রধান গ্রাম সমূহে জলার এবং নালার ঔদ্ভিদ পদার্থ পূর্ণ জলের ব্যবহার হইত। একটা গ্রামে দুই প্রকার জলের ব্যবস্থা ছিল ; কেহ বা জলাজাত-জল পূর্ণ পুষ্করিণী এবং কেহ বা নিঝরিণীর জল পান করিত। যাহারা পুষ্করিণীর জল ব্যবহার করিত কেবল তাহারাই জ্বরাক্রান্ত হইত। টুল্লিবারী নামক গ্রামে জ্বরের অত্যন্ত প্ৰাদুৰ্ভাব ছিল ; বেটিংটন তথায় কূপ খনন করিবার পর জ্বর অন্তহিত হইয়াছিল। মধ্যভারতবর্ষের স্ত্যানিটারী কমিশনার ডাক্তার টাউনূসেণ্ড বলেন যে যাহারা জাঙ্গল প্রদেশ ও ধান্তক্ষেত্রবাহিনী স্রোতস্বতীর জল পান করে তাহারা “এগু” (ague) দ্বারা ভীষণরূপে আক্রান্ত হয় । হিমালয়ের পাদদেশে টেরাই প্রদেশে সকলের এই সংস্কার যে পানীয় জল হইতে ম্যালেরিয়া জ্বরের উৎপত্তি। চুকাপোল জীর্ণ সংস্কার কালীন ৩০ জন কুলী ঐ নদীর জল পান করিয়া, ৩ জন ব্যতীত, সকলেই প্ৰবল জ্বরাক্রান্ত হইয়াছিল। ঐ পোলের সন্নিকটে একটী কুপ খনন করিবার পর হইতে সে স্থান অতিশয় স্বাস্থ্যকর হইয়াছে। আমাদের দেশে জন সাধারণের মনে এই সংস্কার আছে যে নদী ও পুষ্করিণীর প্রথম বর্ষার জলপান মাত্র জ্বর হয়। ডাক্তার ধৰ্ম্মদাস বসু বলেন, তাহার ছোটনাগপুর অঞ্চলে ভ্ৰমণ কালে পাল্কী বেহারিাগণ পাহাড়িয়া নদীর জল পান করিয়া জ্বারাক্রান্ত হইত ; কিন্তু তিনি ঐ জলবৰ্জনবশতঃ জ্বরের হস্ত হইতে অব্যাহতি পাইতেন। আমি ১৮৮৫ সালে গবৰ্ণমেণ্ট কর্তৃক শ্ৰীহট্টের একটা ম্যালেরিয়াক্ৰান্ত প্রদেশে ম্যালেরিয়ার কারণ নিৰ্দ্ধারণ করিবার জন্য নিযুক্ত হইয়াছিলাম। গ্রামে গ্রামে অনুসন্ধান করিয়া আমি এই স্থির করিয়াছিলাম ষে (১) ক্ষুদ্র পাৰ্ব্বতীয় নদীর তীরে জ্বরের যত প্ৰাদুৰ্ভাব, গ্রামের অভ্যন্তরে তত ছিল না ; (২) বৃহৎ নদীর তীরে জ্বরের প্রকোপ ছিল না ; (৩) ক্ষুদ্র পাৰ্ব্বতীয় নদীর জলে ঔদ্ভিদ পদার্থের আধিক্য ছিল এবং (৪) বর্ষার প্রারম্ভে জ্বরের আরম্ভ হইয়াছিল। কলিকাতার নিকটবৰ্ত্তী ম্যালেরিয়াক্ৰান্ত গ্ৰাম সমূহে অনুসন্ধান করিয়া দেখিয়াছি চৈত্র বৈশাখ মাসে নদী পুষ্করিণী প্রভৃতি শুষ্ক হইয়া যায়