পাতা:হিন্দু আইন -বিভূতিভূষণ মিত্র.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দু আইনের উৎপত্তি ও উপকরণ \O তথাপি নিবন্ধকারগণ স্থানে স্থানে মূল স্মৃতিশাস্ত্রের অনেক পরিবর্তন করিয়া দিয়াছেন। স্থানে স্থানে অনেক নূতন কথাও সংযোগ করিয়াছেন। স্মৃতিসমূহ যে সময়ে লিখিত হইয়াছিল, তাহার বহু শতাব্দী পরে নিবন্ধeকারগণ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, এই সময়ের মধ্যে প্রাচীন রীতিনীতির অনেক পরিবর্তন ঘটিয়াছিল। বোধ হয়, সেই কারণে নিবন্ধকারগণ তাহাদের সমসাময়িক সামাজিক রীতিনীতির প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া উক্ত সমাজের মতানুযায়ী করিবার নিমিত্তই প্রাচীন শাস্ত্রসমূহের ঐরূপ পরিবর্তন এবং স্থানে স্থানে নূতন বিষয় সংযোজনা করিয়াছেন । এই নিবন্ধগুলিই হিন্দু আইনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপকরণ এবং আইন হিসাবে স্মৃতিসমূহ অপেক্ষাও ঐগুলি অধিক মূল্যবান। যদি কোনও বিষয়ে স্মৃতি এবং নিবন্ধের মধ্যে মতভেদ লক্ষিত হয়, তাহা হইলে নিবন্ধের মতই গৃহীত হইবে । নিবন্ধ বহুসংখ্যক আছে, তন্মধ্যে কতকগুলির নাম উল্লেখযোগ্য, যথা—জীমূতবাহন প্রণীত "দায়ভাগ” ; বিজ্ঞানেশ্বর প্রণীত “মিতাক্ষর”; রঘুনন্দন প্রণীত "দায়তত্ব” ; শ্ৰীকৃষ্ণ প্রণীত "দায়ক্রম-সংগ্রহ” ; বাচস্পতি মিশ্র প্রণীত “বিবাদ-চিন্তামণি” ; দেবানন্দ ভট্ট প্রণীত “স্মৃতি-চন্দ্রিকা” ; চণ্ডেশ্বর প্রণীত “বিবাদ-রত্নাকর” ; মিত্ৰমিশ্র প্রণীত “বীরমিত্রোদয়” প্রভৃতি। এই সমস্ত গ্রন্থগুলি সকল দেশ সমানভাবে প্রচলিত নহে ; কোনটী বঙ্গদেশে প্রচলিত, কোনটী বা মিথিলায় প্রচলিত, এইরূপ । বঙ্গদেশে দায়ভাগ, দায়তত্ত্ব, দায়ক্রমসংগ্রহ এবং বীরমিত্রোদয় এই চারিট গ্রন্থ প্রচলিত ; তন্মধ্যে দায়ভাগই সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ । যদি কোনও বিষয়ে এই চারিট গ্রন্থের মধ্যে মতভেদ দৃষ্ট হয়, তাহা হইলে দায়ভাগের মতই গৃহীত হইবে। - একাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথমে, অর্থাৎ আট শত বৎসর পূৰ্ব্বে জীমূতবাহন কর্তৃক দায়ভাগ রচিত হইয়াছিল। ইহা প্রধানত: মনুসংহিতার টীকা