পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

করেছে এবং করে' চলেছে এখনো। সেই সব পরীক্ষার হিসেব পুঁথির আকারে সময়ে সময়ে ধরে' রাখতে চেয়ে লিখিয়ে তাঁরা লিখলেন পুঁথি— যেগুলো সংগ্রহ মাত্র, Encyclopedia বা Catalogue। সুতরাং পুঁথি যে লেখা হ’য়ে ঢুকেছে এমন কথা বলা যায় না। অনেক কিছু কথা যা এখনকার তা আজ থেকে শত শত বৎসরের পুরোনো পুঁথিতে থাকতে পারে না। এই ধরণের লেখাকে শিল্পশাস্ত্র কি আর কোন শাস্ত্র বলে' নাম দেওয়াই ভুল–Encyclopediaকে Gospel বলে' ধরার মতো কায। সব জাতেরই মধ্যে ধর্মশাস্ত্র এবং সেই সব ধর্ম পালনের নিত্য-ক্রিয়াপদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু সেই সব ক্রিয়া যথালিখিত পালন করে’ কেউ ইন্দ্রত্ব কেউ বুদ্ধত্ব পেলে কিনা, কি কারু জন্য সেণ্ট-পিটার স্বর্গের চাবি সহজে খুলে' দিলে কি না বা হুরীরা বেহেস্তের দ্বারে অপেক্ষা করলে কি না তা পরীক্ষা করে' প্রমাণ করার উপায় নেই। কিন্তু শিল্প সঙ্গীত ইত্যাদি নানা শাস্ত্রের ক্রিয়াপদ্ধতি হাতে কলমে পরীক্ষা করে' ফলাফল জানবার উপায় আছে। তাতে করে দেখা যায় যে মানুষের অনেক অসম্পূর্ণ পরীক্ষার হিসেব এই সব তথাকথিত শিল্পশাস্ত্রের অনেক অংশ ভর্তি এবং যেভাবে ক্রিয়া করে' চলে' যে ফল পাওয়া উচিত মানুষ তা পায় না। আবার দেখি যে সব পরীক্ষা রং রেখা সুরসার ছন্দোবন্ধ ইত্যাদি নিয়ে মানুষ অনেক কাল আগে সম্পূর্ণ করে' গেছে তারও সমস্ত প্রক্রিয়ার হিসেব নানা শাস্ত্রে ধরা রয়েছে। যথাযথভাবে সেই সব ক্রিয়া পালন করে' চলে' পুরোপুরি ফলও পাচ্ছে তখনকার মতো এখনকার কর্মীরাও।

 যে সব ক্রিয়া সুপরীক্ষিত না হ’য়েই শাস্ত্রের পুঁথিগুলোতে ধরা গেছে, তার বিষয়ে দীপক মেঘমল্লার গেয়ে জল আগুনের ক্রিয়া দৃষ্টান্তস্বরূপ ধরা যেতে পারে। কতকগুলো ক্রিয়া করে' বৃষ্টি আনা যেতে পারে এই বিশ্বাসে খুব আদিম যুগে মানুষ পরীক্ষা সুরু করলে। ধারা ব্রত হ'তে থাকলো, সাত তারা আঁকা জলের কলসী ফুটো করে' করে' আকাশ ফুটো করার রূপক ধরে' একটা ক্রিয়া—এই ভাবে পরীক্ষা চল্লো কত কাল এবং মেয়েদের মধ্যে এখনো চলছে। তারপর সুরু হ'ল নতুন পরীক্ষা, যজ্ঞ-ক্রিয়ার দ্বারা ইন্দ্রকে খুসি করে' জল আদায় এবং মেঘমল্লার গেয়ে বাদল আনা। এই সব পরীক্ষার ক্রিয়া-কাণ্ডের