পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গলপ-গ্রশ্নোৱলী اهده নিরঞ্জন চেয়ারে উচ্চ হইয়া উঠিয়া বলিল, “কি রে রাম, ব্যাপার কি ? হঠাৎ পাগল হয়ে গেলি নাকি ?” রাম তখন যেন এলাইয়া পড়িল। বলিল, “পাগল হইনি দাদা—তবে শোন। ঐ ড়োরী-তোমার--অাপন বোন ! " নিরঞ্জন বলিয়া উঠিল, “সে কি রে ?—বোন কি রে ? আমার ত কোনও দিন বোন হয়েছিল বলে শুনিনি।” রাম বলিল, “তোমার-মা'র পেটের বোন নয়। তব-ও তোমার—আপন বোন ।” “আমার বাবার মেয়ে ?” “হ্যাঁ।” to নিরঞ্জনও এতক্ষণে ঈজি-চেয়ারে এলাইয়া পড়িল। বলিল, “বাবার ষে আর এক বিয়ে ছিল, তা ত আমি কোনও দিন শনিনি রামদা। রাম বলিল, “কত্তার বিয়ে অাঁর ছিল না বটে। কিই বা বলি ছাই –তুমি দাদাবাব, তখন বছর দয়েকের হবে। কত্তা তখন মাঝে মাঝে কলকাতায় আসতেন, এক মাস দামাস করে থাকতেন। সেই সময ঐ ঘটনা হয়। কত্তা তাঁকে ভবানীপুরে বাড়ী কিনে দিয়েছিলেন, মিশনারী মেম রেখে তাঁকে লেখাপড়া শেখাতেন। ঐ ডোরা যখন জন্মালো, তখন ত আমরা ভবানীপুরের বাড়ীতেই। তোমার বয়স তখন তিন কি বড় জোর চার ।” নিরঞ্জল প্রথমটা এ কথাগুলির অর্থ ভাল বুঝিতে পারিল না । তাহার পর ধীরে ধীরে –আসল অথটিা তাহার মাথায় আসিল। সে কিছুক্ষণ গম হইযা বসিযা রহিল। তাহার পর একটি দীঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “আমাব মা এ কথা জানতেন ?" "וזהב" ‘মামাবাব ? “প্রথম প্রথম তিনিও জানতেন না, পরে জেনেছিলেন। কত্তার সবগলাভের পর, মামাবাব মাঝে মাঝে এসে ডোরার মা’র সঙ্গে দেখা করতেন, তখন ওর নাম ডোরা ছিল ন, তখন ওর নাম ছিল পটি—মিশনারীরা ওর ডোরা নাম রেখেছিল । পঃটির মা, মামাবাবকে দাদা দাদা বলতো। পটিকে তিন বছরের রেখে কত্তা সবগে গেলেন, পাঁচ বছরের রেখে পটির মাও গেলেন। মরবার অাগেই বাড়ীখানি, টাকা-কড়ি, গহনাপত্র যা তার ছিল, মিশনারীদের ফণ্ডে দান ক’রে যান, আর বলে যান, আমাব মৃত্যুর পব আমার মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে তোমরা মানুষ কোরো-ওকে লেখাপড়া শিখিও, ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দিও।” “এ সমস্ত কথা তোকে কে বললে ?” "মামাবাব সে সময় খোঁজ-খবর নিতে কলকাতায় এসেছিলেন, তিনিই গিয়ে আমাকে বলেন ।” নিরঞ্জন আবার দই তিন মিনিটকাল নীরবে বসিয়া রহিল। তাহার পর জিজ্ঞাসা করিল, “হ্যাঁ রামদা, ডোরা কি এ সব কথা কিছ জানে ? তার আমার কি সম্মবন্ধ, তা কি সে জানতে পেরেছে ?” 豪 “পেরেছে বইকি। আপন ভাই জেনেষ্ট ত প্রাণ দিয়ে তোমার সেবা করেছে। নইলে ভাড়াটে নাস কি আর অত করে দাদাবাব ?" "ডোরা কি ক’রে জানলে ?” “মামাবাব আসবার ৩৪ দিন পরে, একদিন তিনি ডোরাকে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন। বাপের নাম জিজ্ঞাসা করতেই—সে কত্তার নাম করে দিলে। তার পর কথায় কথায় সবই বেরিয়ে পড়লো। ডোরার বাসায় তার মা-বাপের ফটোগেরাপ ছিল,