পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল ভারী গাড়ির আওয়াজ পাইবা রসিক চক্রবর্তীকে শুনাইরা একটা চারকে ভাকিয়া কহিল, ওরে এগিয়ে দেখত রে, আমাদের গাড়ি কি না ! ঘোড়া ত্বটোকে হয়রাণ ক’রে মারলে বলে রাগ করে দুটাে কথা বললুম, আর বেটায়া কি না সত্যি মনে করে গাড়ি নিয়ে ইস্টেশনে ফিরে গেলি ! গুণধর ভায়ের জন্ত আবার গাড়ি পাঠাতে হবে ! সংস্কার রাগ হবে বলে ত আর ঘোড়া ত্বটোকে মেরে ফেলা যায় না ! রসিক শুনিতে পাইল, কিন্তু ভালো-মন্দ কোন কথাই কহিল না। অনতিকাল পরে খালি গাড়ি ফিরিয়া আস্তাবলে চলিয়া গেল। চাকয় আসিয়া সংবাদ দিল । রসিক সম্মুখে ছিল। গোকুল তাহার পানে চাহিয়া কাষ্ঠহাসি হাসিয়া কহিল, তবে ত দুঃখে মরে গেলুম! যা, যা, বাড়িতে গিয়ে গিনীকে বল গে, তার পাশ-কর ছেলের কীৰ্ত্তি ! কাল-পরশু এলে যদি তাকে ফটক পার হতে দিই ত তখন তোরা বলিস্—হঁ্য, সে ছেলে গোকুল মজুমদার নয় । একবার যখন বেঁকে বসেচি, তখন স্বয়ং ব্ৰহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর এসেও যদি তার হয়ে বলে, তবুও মূখ পাবে না বলে দিচ্ছি। তুমি মাকে বলে দাও গে চকোক্তিমশাই, পৃথিবী ওলট-পালট হয়ে যাবে, তযু গোকুল মজুমদারের কথার নড়চড় হবে না। সময়ে এলে কিছু পেত ; এখন আর একটি পয়সাও না। বাড়ি ঢুকতেই ত তাকে দেব না।—বলিয়া গোকুল হন হন করিয়া ভিতরে চলিয়া গেল । গোকুল কাহার উপরে ক্রোধ করিয়া যে অসময়ে আসিয়া সন্ধ্যায় পরেই শয্যা গ্রহণ করিল, তাহ বাটীর মেয়ের টের পাইল না। দাসী দুধ খাইবার জন্ত আহরোধ করিতে আসিয়া ধমক্‌ খাইয়া ফিরিয়া গেল। দোকানের গোমস্তার উপর অধ্যাপক-বিদায়ের কর্গ প্রস্তুতের ভার ছিল। সে ঘরে আসিয়া কি একটা কথা জিজ্ঞেস করিবামাত্রই গোকুল তড়া করিয়া উঠিয়া কাগজখানা ছিনাইয়া লইয়া খণ্ড খণ্ড করিয়া ছিড়িয়া ফেলিয়া দিয়া কহিল, বাবা দশখান। তালুক রেখে যাননি যে, রাজা-রাজড়ার মত পত্তিতবিদায় করতে হবে! যাও, যাও, ওসব আমিরী ঢাল আমার কাছে খাটবে না। লোকটা বারপরনাই কুষ্টিত ও লজ্জিত হইয়া চলিয়া গেল। ; ভবানী জানিতে পারিয়া ঘরের বাহিয়ে চৌকাঠের কাছে আসিয়া বসিলেন। সম্বেহে স্বত্বকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোর কি কোনরকম অস্থখ বোধ হচ্ছে গোকুল ? গোকুল যেমন গুইয়াছিল তেমনিভাবে জবাব দিল, না! ভবানী বলিলেন, না, তবে যে কিছু খেলিনে, হঠাৎ এমন সময় এলে যে গুয়ে श्रृंख्नजि ? গোকুল কহিল, পড়লুম।

  • } &