পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉や、 স্বামীজীর রাণী ও রচনা এখন পুর্বের ভাব সব বদলাইয়া যাইতেছে। এখন কারাগারকে অনেকস্থলে ‘সংশোধনাগার’ বলা হয় । সব বিষয়েই এরূপ ঘটিয়াছে। জ্ঞাতসাৰে বা অজ্ঞাতসারে প্রত্যেক ব্যক্তির ভিতরেই দেবত্ব বর্তমান—এই ভারতীয় ভাব ভারতের বাহিরে অন্যান্য দেশেও নানা ভাবে ব্যক্ত হইতেছে । আর কেবল তোমাদের শাস্ত্রেই ইহার ব্যাখ্যা রহিয়াছে ; অন্যান্য জাতিকে ঐ ব্যাখ্যা গ্রহণ করিতেই হইবে । মানুষের প্রতি মানুষের ব্যবহারে গুরুতর পরিবর্তন আসিবে, আর মানুষের কেবল দোষপ্রদর্শনরূপ পুরাতন ভাব লোপ পাইবে। এই শতাব্দীর মধ্যেই ঐ ভাব চরম আঘাত পাইবে । এখন লোকে নিজদিগকে গালিমন্দ করিতে পারে । জগতে পাপ নাই”—আমি নাকি এই ঘোর পৈশাচিক তত্ত্ব প্রচার করিয়া থাকি ; জগতের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত লোকে আমাকে এজন্য গালি দিয়াছে। ভাল কথা, কিন্তু এখন যাহারা আমায় গালি দিতেছে, তাহাদেরই বংশধরগণ—আমি অধৰ্ম প্রচার করি নাই, ধর্মই প্রচার করিয়াছি বলিয়া আমাকে আশীৰ্বাদ করিবে । অজ্ঞানান্ধকার বিস্তার না করিয়া জ্ঞানালোক বিস্তার করিবার চেষ্টা করিতেছি বলিয়া আমি গৌরব অনুভব করিয়া থাকি । - আমাদের উপনিষদ হইতে আর একটি মহান উপদেশ লাভ করিবার জন্য পৃথিবী অপেক্ষা করিতেছে—সমগ্র জগতের অখণ্ডত্ব। অতি প্রাচীন কালে এক বস্তু ও আর এক বস্তুতে যে পার্থক্য বিবেচিত হইত, এখন অতি দ্রুত তাহ। চলিয়া যাইতেছে । তড়িৎ ও বাষ্প-শক্তি জগতের বিভিন্ন অংশকে পরম্পরের সহিত পরিচয় করাইয়া দিতেছে। তাহার ফলস্বরূপ আমরা হিন্দুগণ এখন আর আমাদের দেশ ছাড়া অন্য সব দেশকে কেবল ভূত-প্রেত ও রাক্ষস-পিশাচে পুর্ণ বলি না, এবং খ্ৰীষ্টান দেশের লোকেরাও বলেন না—ভারতে কেবল নরমাংসভোজী ও অসভ্য মানুষের বাস । 4. আমাদের উপনিষদ ঠিকই বলিয়াছেন—অজ্ঞানই সর্বপ্রকার দুঃখের কারণ " সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের যে-কোন অবস্থায় প্রয়োগ করি না কেন, দেখা যায়, উহা সম্পূর্ণ সত্য অজ্ঞানবশতই আমরা পরস্পরকে ঘৃণা করি, পরস্পরকে জানি না বলিয়াই আমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা নাই | যখনই আমরা পরস্পরকে ঠিকমত জানিতে পারি, তখনই আমাদের মধ্যে প্রেমের উদয় হয়, হইবেই তো কারণ আমরা সকলেই কি এক নহি ? স্বতরাং