পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
বিবিধ সমালোচন।

বেহায়া বলিতে হয় “অসন্তোসে উণ কিং করেদি?” তাহার প্রমাণ। যে শকুন্তলা, ইহার কয় মাস পরে, পৌরবের সভাতলে দাঁড়াইয়া দুষ্মন্তকে তিরস্কার করিয়া বলিয়াছিল “অনার্য্য। আপন হৃদয়ের অনুমানে সকলকে দেখ?”—সে শকুন্তলা যে, লতামণ্ডপে বালিকাই রহিল, তাহার কারণ কুলকন্যাসুলভ লজ্জা নহে। তাহার কারণ—দুষ্মন্তের চরিত্রের বিস্তার। যখন শকুন্তলা সভাতলে পরিত্যক্তা, তখন শকুন্তলা পত্নী, রাজমহিষী, মাতৃপদে আরোহণোদ্যতা, সুতরাং তখন শকুন্তলা রমণী; এখানে তপোবনে,—তপস্বিকন্যা, রাজপ্রসাদের অনুচিত অভিলাষিণী,—এখানে শকুন্তলা কে? করিশুণ্ডে পদ্মমাত্র। শকুন্তলায় কবি যে টেম্পেষ্টের কবি হইতে হীনপ্রভ নহেন, ইহাই দেখাইবার জন্য এস্থলে আয়াস স্বীকার করিলাম।


দ্বিতীয় শকুন্তলা ও দেসনিমোনা।

 শকুন্তলার সঙ্গে মিরন্দার তুলনা করা গেল—কিন্তু ইহাও দেখান গিয়াছে, যে শকুন্তলা ঠিক্ মিরন্দা নহে। কিন্তু মিরন্দার সহিত তুলনা করিলে শকুন্তলা চরিত্রের একভাগ বুঝা যায়। শকুন্তলা চরিত্রের আর একভাগ বুঝিতে বাকি আছে। দেসদিমোনার সঙ্গে তুলনা করিয়া সেভাগ বুঝাইব ইচ্ছা আছে।

 শকুন্তলা এবং দেসদিমোনা, দুই জনে পরস্পর তুলনীয়া, এবং অতুলনীয়া। তুলনীয়া কেননা উভয়েই গুরুজনের অনুমতির অপেক্ষা না করিয়া আত্মসমর্পণ করিয়াছিলেন। গোতমী শকুন্তলা সম্বন্ধে দুষ্মন্তকে যাহা বলিয়াছেন, ওথেলোকে লক্ষ্য করিয়া দেসদিমোনা সম্বন্ধে তাহা বলা যাইতে পারে—

ণাবেকিথদো গুরুঅণো ইমিএ ণ তুএবি পুচ্ছিদো বন্ধু।
এক্কক্কং এব্ব চরিএ কিংতণদু এক্কং এক্কস্ম।