পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eూ: সম্ভবত বাংলার কথাই তিনি ভাবিতেছেন ; কিন্তু বাংলা দেশেও চাকরীতে হিন্দুর একাধিকার নাই । আবদার রহিম সাহেব বুদ্ধিজীবী শিক্ষিতের “রাজত্ব” দূর করিতে চান ; তবে কি তিনি বুদ্ধিহীন অশিক্ষিতের রাজত্ব স্থাপন করিতে ইচ্ছক ? এইরূপ করিতে পারিলে নিঃসন্দেহ একটা নুতন কিছু করা হবে । কেননা, এমন কি সভিয়েট রুশিয়াতেও লেনিন বা ট্রটুস্কি প্রমুখ শিক্ষিতগণেরই রাজত্ব । স্তর আব্দার রহিমের অতি বড় বন্ধু ও তাহাকে নিরক্ষরত গুণে গুণী বলিবেন না । তিনি অশিক্ষিত বা বুদ্ধিহীনও নহেন। স্বতরা তাহার আদর্শে গঠিত নবতন্ত্রে তাহার নিজেরই স্থান হইবে না বলিয়া মনে হয় । কেননা, তিনি নিশ্চয় নিৰ্ব্বোপ সাজিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভাগী হইতে চাহিবেন না । র্তাহার ইস্তাহারে আর একটি রত্ন পা ওয়া ধায় । উক্ত। নিম্নলিখিত রূপ । “এই ( স্বায়ত্বশাসন ) কাৰ্য্য উত্তমরূপে করিতে হইলে সকল রাষ্ট্রীয় ও শাসনসংক্রান্ত কাৰ্য্য দেশবাসীর নানান্‌ শ্রেণীর বিভিন্ন প্রকার ধৰ্ম্ম, সামাজিক সংস্কার ও ইতিহাস অসুযায়ীরূপে চালাহতে হইবে । এই উপায় অবলম্বন ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে ভারতে একটি আত্মনির্ভরশীল শক্তি ও সমুদ্ধিশালী জাতি গড়িঘ তুল সম্ভবপর হইবে না ।” উপরোক্ত বাণী অকুমায়ী কাৰ্য্য করিলে তাহার অর্থ এই দাড়াইবে, মে, রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে বর্তমান উন্নততম রাষ্ট্রনীতির ও সভ্যতার উচ্চ আদশের স্থান আর থাকিবে না, এবং এই ব্যাপারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গণ্ডীর কুসংস্কার, নিবুদ্ধিতা, খেয়াল, কুরুচি ও কুপ্রথাই প্রাধান্য লাভ করিবে। একথা বলাই বাহুল্য, যে, সকল শ্রেণীর লোকের বুদ্ধি, রুচি ও সুবিধা এক প্রকার হইবে না। সুতরাং আকারী আমলে ভারতীয় রাষ্ট্রনীতি বলিতে বিশেষ কিছু বুঝাইবে না। রাষ্ট্রনীতির ইতিহাসে যত প্রকার নাম পাওয়া যায়, তাহার কোনটিই এ অপূৰ্ব্ব রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে থাটিবে না । স্তর আবদারের উদেশ্ব অবত এই, যে, বাংলার মুসলমানগণ গুণাগুণ নির্বিশেষে যাহাতে সরকারী চাকরীর অধিকাংশ পাইতে পারেন তাহার বন্দোবস্ত কর । অর্থাৎ কিনা হিন্দু ও খৃষ্টিয়ানগণ মুসলমান অপেক্ষ উচ্চশিক্ষিত এবং যোগ্য হইলেও তাহাদের নিষ্কৰ্ম্ম হইয়া বসিয়। থাকিতে হইবে এবং বাংলায় “অশিক্ষিতের রাজত্ব” আরম্ভ হইবে । এই দিক্ দিয়া দেখিলে স্তর আবদারের শিক্ষিতের প্রতি অভক্তি সম্পূর্ণ অর্থহীন নহে বলিয়া বুঝা যাইবে । স্ত্যর আবদার জাতিগঠনের আদর্শ ও উপায় বলিয়া প্রবাসী-জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড যাহা প্রচার করিয়াছেন, তাহ কেবল মাত্র , তাহার অজ্ঞতার পরিচায়ক। এ অজ্ঞতা অবহু শুধু ভাণ মাত্র হইতে পারে । কেননা শ্রেণীগত বিভিন্নতা বজায় রাথা জাতিগঠনের উপায় যে কোন মতেই নহে, তাহা স্যর অাব দার রহিমের মত শিক্ষিত লোকের জানিবারই কথা । স্তর আবদারের পার্টির ইচ্ছ। ভারতে প্রাদেশিক আত্মকর্তৃত্ব স্থাপন করা । ইহা অতি উত্তম কথা । কিন্তু শুধু ভোটের বেলা লোকের ধৰ্ম্ম না দেখিয় তাহার ক্ষমতা গুণাগুণ দেখার বন্দোবস্ত করিতে হইবে। ধৰ্ম্মসম্প্রদায় অনুসারে পৃথকৃ পৃথক প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচন প্রথার উচ্ছেদ না হইলে ভারতে জাতীয়তার কোন আশা নাই । অ småmyras স্বৰ্গীয়া সরোজকুমারী দেবী যে-সকল বাঙালী ভদ্রলোক ও মহিলা স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বাংলা দেশের বাহিরে বাস করেন, তাহদের মধ্যে র্যাহার। বাংলা সাহিত্যের চর্চা করেন এবং তাহাকে সমৃদ্ধ করেন, প্রবাসী বাঙালীদের মোট সংখ্যা ধরিলে তাহদের সংখ্যা কম বলা যায় না । বঙ্গের বাহিরে থাকিয় র্যাহার। বাঙালীর আন্তরিক জীবনম্রোতের সহিত এই প্রকারে ধোগ রক্ষা করিতেন, শ্ৰীযুক্ত সরোজকুমারী দেবী তাহীদের মধ্যে একজন ছিলেন । তাছার অকালমৃত্যুতে বঙ্গসাহিত্য ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে । তিনি ইং ১৮৭৫ সালের ৪ঠা নবেম্বর ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন । বৰ্ত্তমান ১৯২৬ সালে তাহার মৃত্যু হইয়াছে । মৃত্যুকালে তাহার বয়ঃক্ৰম ৫১ বৎসর পূর্ণ হয় নাই । সম্বলপুরের প্রসিদ্ধ উকিল শ্ৰীযুক্ত যোগেন্দ্রনাথ সেন তাহার স্বামী । ইং ১৮৮৬ সালে তাহাদের বিবাহ হয় । এইরূপ অল্প বয়সে বিবাহিত হইবার পর সরোজকুমারী নিজের চেষ্টায় লেখাপড় শিখিয়াছিলেন। র্তাহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত বঙ্গসাহিত্যক্ষেত্রে এবং ভারতীয় সাংবাদিকদিগের মধ্যে সুপরিচিত । স্বগীয়া সরোজকুমারী দেবীর নানা প্রকারের অনেক বাংলা লেখা প্রধান-প্রধান মাসিক পত্রে বাহির হইত র্তাহার কতক গুলি কবিতা ও গল্প পুস্তকাকারে বাহ্যি হইয়াছে। কবিতার বহিগুলির নাম ‘হাসি ও অশ্রু ‘অশোক্কা’ এবং ‘শতদল’ । গল্পের বহিগুলির না 'অদৃষ্টলিপি’, ‘ফুলদানি’ এবং 'কাহিনী বা ক্ষুদ্র গল্প মাসিক পত্রের ভাষায় যাহাকে ছোট গল্প বলে, র্তাহা অনেকগুলি গল্প সেরূপ নয়, তাহা অপেক্ষা বড়। সে গুলি ছোট উপন্যাস আখ্যা পাইবার যোগ্য। শ্ৰীযুদ্ধ