৫ম সংখ্যা ] গোতমের সাধনা ও সিদ্ধি ; ৫৭৯ যে-অবস্থাতৃে কোন বস্তুর অস্তিত্ব উপলব্ধি হয় না, সেই অবস্থার নাম আকিঞ্চন্য আয়তন । এই অবস্থা শূন্তময়। . পরে আমরা দেখিব যে, গোত্ম অনুভব করিয়াছিলেন যে, ইহা অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠতর অবস্থা আছে। আলাড় কালামের সাধন-প্ৰণালীতে গোতম সন্তুষ্ট ও নিশ্চিন্ত হইণ্ঠে পারেন নাই । রাম-পুত্র উজ্জ্বক ইহার পরে তিনি রাম-পুত্র উদ্ধক-নামক একজন গুরুর শিষ্যত্ব গ্রহণ করিলেন । উদকের যাহা-কিছু শিখাইবার ছিল, তাহ সমুদায়ই তিনি শিখিলেন । কিন্তু ইহাতেও গোতম পরিতৃপ্ত হইতে পারিলেন না। র্তাহার মনে এইপ্রকার চিন্ত হইল :– আমি যে-ধৰ্ম্ম লাভ করিলাম, ইহা দ্বারা নিৰ্ব্বেদ, বৈরাগ্য, নিরোধ, উপশম, অভিজ্ঞ, সম্বোধ এবং নিৰ্ব্বাণ লাভ করা যায় না । এই অবস্থা কেবল সংজ্ঞা ও অসংজ্ঞা—এতদুভয়ের অতীত অবস্থা। উরুবেলা এইজন্য তিনি উদকের আশ্রম পরিত্যাগ করিলেন । ইহার পরে তিনি মগধ দেশে উরুবেলা-নামক গ্রামে উপস্থিত হইলেন। র্তাহার মনে হইল-এই স্থান কি রমণীয়। অদূরে শুভ্রসলিলা স্রোতস্বতী প্রবাহিত হইতেছে ; এস্থলে চিত্ত স্বভাবতঃই প্রসাদগুণসম্পন্ন হইয়া থাকে। গ্রামও সন্নিকটে, ভিক্ষারও বিম্ব হইবে না । এই স্থানই কুলপুত্ৰগণের সাধনের উপযুক্ত । এই স্থানেই তিনি কঠোর তপস্তায় প্রবৃত্ত হইলেন । তিনি কি-প্রকার কঠোর তপস্তা করিয়াছিলেন, তাহ "গোতমের তপস্তা”-নামক প্রবন্ধে বর্ণিত হইয়াছে । যখন তিনি দেখিলেন এপ্রকার তপস্তায় সিদ্ধিলাভের কোন সম্ভাবনা নাই, তখন তিনি কৃচ্ছসাধন পরিত্যাগ করিলেন । ইহার অন্ত প্রণালী অবলম্বন করিয়া সাধনে প্রবৃত্ত হইলেন। o - ". . 1" নির্জন-সাধন কৃচ্ছসাধন পরিত্যাগ করিবার পরও গোতম
নির্জনে সাধন করিতেন। কিন্তু নিৰ্দ্ধন-সাধন সহজ ব্যাপার নহে। এক সময়ে জাহস্সোণি-নামক একজন । লোক গোতম বুদ্ধকে এইরূপ বলিয়াছিলেন – -و *হে গোতম! অরণ্যে বাস, প্রাস্তরে অবস্থান অত্যন্ত কষ্টকর ; নির্জনে কালাতিপাত অতি দুষ্কর ; একাকিত্ব দুঃখময়। যে-সমুদায় ভিক্ষুর মন সমাধিতে মগ্ন হয় না, . বনে তাহাদিগের প্রাণ উৎক্ষিপ্ত হয়।” গোতয় বলিলেন :– “হে ব্রাহ্মণ! ठेिक বলিয়াছ ।---------যখন আমি বুদ্ধত্ব লাভ করি নাই, যখন কেবল বোধিসত্ত্ব ছিলাম, তখন আমারও মনে এইপ্রকার ভাব , হইয়াছিল। যে-সমুদায় শ্রমণ ও ব্রাহ্মণের কায়িক, বাচনিক ও মানসিক কাৰ্য্য পরিশুদ্ধ হয় নাই, যাহাদের জীবিকা অপরিশুদ্ধ, যাহারা লোভপরায়ণ, কাম্য বস্তুতে যাহদিগের তীব্র অনুরাগ, যাহারা হিংসাপরায়ণ ও যাঁহাদিগের সঙ্কল্প প্ৰদূষিত, যাহারা আলস্যপরায়ণ ও নিশ্চেষ্ট, যাহারা উদ্ধত ও অশাস্তচিত্ত, যাহাদের প্রাণ অনিশ্চিত, ও সন্দেহপূর্ণ, যাহারা আপনাকে গৌরৰাতি ও 3. .بA অপরকে হীন করে, যাহারা ভীত ও স্তম্ভিত, বাঁহার লাভ সৎকার ও প্রশংসা কামনা করে, যাহারা কুসীদ ও হীনবীৰ্য্য, যাহাদিগের স্মৃতি বিভ্রান্ত ও যাহারা অসম্প্রজ্ঞ, যাহারা অসমাহিত ও বিভ্রান্তচিত্ত, যাহার দুষ্প্রজ্ঞ ও মূখ, সেই-সমুদায় শ্রমণ ও ব্রাহ্মণের পক্ষে অরণ্যে অবস্থান ও প্রাস্তরে বাস ভয়ভৈরবপূর্ণ—. যেহেতু তাহাদিগের জীবন অপরিশুদ্ধ। কিন্তু আমার সমুদায় কার্ধ্য পরিশুদ্ধ ছিল, কাম লোভ অহঙ্কারাদি । বিদূরিত হইয়াছিল, মৈত্রীভাব-দ্বারা আমার প্রাণ পূর্ণ হইয়াছিল। ইহা আমি সম্যক অনুভব করিয়া অরণ্যে বিহার করিতাম এবং ইহাতে আমার হৃদয় আননো পূর্ণ হইত।” ( ভয়ভেরব স্বত্ত )। . ভয়-ভৈরব-পরাভব ইহার পরে গোতম বলিয়াছিলেন, “একদিন আমার ; মনে হইল রাত্রিতে অষ্টমী, বা চতুর্দশী বা পঞ্চদশী তিথিতে কোন আরামের বনুভূমিতে বা বৃক্ষসমীপবৰ্ত্তী কোন চৈত্যে গমন করিয়া সমুদায় রাত্রি বাস করিব। যদি লোমহর্ষণকারী ভয়ঙ্কর স্থানে বাস করি, তাহা হইলে
- "