পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8&e ब्रदौटग्न-ब्रक्रमाबली ক্রমশ ভারতবর্ষে রাজ্য সাম্রাজ্য নগরনগরী স্থাপিত হয়েছে, দেশ-বিদেশের সঙ্গে তার পণ্য আদানপ্রদান চলেছে, অন্নলোলুপ কৃষিক্ষেত্র অল্পে অল্পে ছায়ানিস্তৃত অরণ্যগুলিকে দূর হতে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই প্রতাপশালী ঐশ্বৰ্ষপূর্ণ ীেবনদৃপ্ত ভারতবর্ষ বনের কাছে নিজের ঋণ স্বীকার করতে কোনো দিন লজ্জাবোধ করে নি। তপস্তাকেই সে সকল প্রয়াসের চেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছে, এবং বনবাসী পুরাতন তপস্বীদেরই আপনাদের আদি পুরুষ বলে জেনে ভারতবর্ষের রাজা মহারাজাও গৌরব বোধ করেছেন । ভারতবর্ষের পুরাণ-কথায় যা কিছু মহৎ আশ্চর্ষ পবিত্র, যা কিছু শ্রেষ্ঠ এবং পূজ্য সমস্তই সেই প্রাচীন তপোবন-স্মৃতির সঙ্গেই জড়িত। বড়ো বড়ো রাজার রাজত্বের কথা সে মনে করে রাখবার জন্তে চেষ্টা করে নি কিন্তু নানাবিপ্লবের ভিতর দিয়েও বনের সামগ্ৰীকেই তার প্রাণের সামগ্ৰী করে আজ পর্যন্ত সে বহন করে এসেছে। মানব-ইতিহাসে এইটেই হচ্ছে ভারতবর্ষের বিশেষত্ব । ভারতবর্ষে বিক্রমাদিত্য যখন রাজা, উজ্জয়িনী যখন মহানগরী, কালিদাস যখন কবি, তখন এদেশে তপোবনের যুগ চলে গেছে । তখন মানবের মহামেলার মাঝখানে এসে আমরা দাড়িয়েছি। তখন, চীন, হুন, শক, পারসিক, গ্রীক, রোমক, সকলে আমাদের চারিদিকে ভিড় করে এসেছে । তখন জনকের মতো রাজা একদিকে স্বহস্তে লাঙল নিয়ে চাষ করছেন, অন্ত দিকে দেশ-দেশান্তর হতে আগত জ্ঞানপিপাস্থদের ব্রহ্মজ্ঞান শিক্ষা দিচ্ছেন, এ দৃপ্ত দেখবার আর কাল ছিল না। কিন্তু সেদিনকার ঐশ্বর্ধমদগর্বিত যুগেও তখনকার শ্রেষ্ঠ কবি তপোবনের কথা কেমন করে বলেছেন তা দেখলেই বোঝা যায় যে, তপোবন যখন আমাদের দৃষ্টির বাহিরে গেছে তখনও কতখানি আমাদের হৃদয় জুড়ে বসেছে । কালিদাস ষে বিশেষভাবে ভারতবর্ষের কবি, তা তার তপোবন-চিত্র থেকেই সপ্রমাণ হয়। এমন পরিপূর্ণ আনন্দের সঙ্গে তপোবনের ধ্যানকে আর কে মৃতিমান করতে পেরেছে ! রঘুবংশ কাব্যের যবনিকা যখনই উদঘাটিত হল তখন প্রথমেই তপোবনের শাস্ত স্বন্দর পবিত্র দৃপ্তটি আমাদের চোখের সামনে প্রকাশিত হয়ে পড়ল । সেই তপোবনে বনাপ্তর হতে কুশসমিং ফল আহরণ করে তপস্বীরা আসছেন এবং যেন একটি অদৃপ্ত অগ্নি তাদের প্রত্যুদগমন করছে। সেখানে হরিণগুলি ঋষিপত্নীদের সস্তানের মতো ; তারা নীবার ধান্তের অংশ পায় এবং নিঃসংকোচে কুটিরের দ্বার রোধ করে পড়ে থাকে। মুনিকস্তারা গাছে জল দিচ্ছেন এবং