পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবীন ピ8等 নিজে ও বেরিয়ে না পড়লে ওর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঠেকাবে কী করে ? আমার ঘর-যে ওর যাওয়া-আসার পথের মাঝখানে ; দেখা দেয় যদি-বা, তার পরেই সে দেখা আবার কেড়ে নিয়ে চলে যায়। মোর পথিকেরে বুঝি এনেছ এবার করুণ রঙিন পথ তবু ওকে ক্ষণকালের বঁাধন পরিয়ে দিতে হবে। টুকরো টুকরো মুখের হার গাঁথব— পরাব ওকে মাধুর্যের মুক্তোগুলি । ফাগুনের ভরা সাজি থেকে যা-কিছু ঝরে ঝরে পড়ছে কুড়িয়ে নেব, বনের মর্মর, বকুলের গন্ধ, পলাশের রক্তিমা— আমার বাণীর সুত্রে সব গেথে বেঁধে দেব তার মণিবন্ধে । হয়তো আবার আরবসন্তেও সেই আমার-দেওয়া ভূষণ প’রেই সে আসবে। আমি থাকব না, কিন্তু কী জানি, আমার দানের ভূষণ হয়তে থাকবে ওর দক্ষিণ হাতে । ফাগুনের নবীন আনন্দে দ্বিতীয় পর্ব বেদন কী ভাষায় রে মর্মে মর্মরি গুঞ্জরি বাজে । সে বেদন সমীরে সমীরে সঞ্চারে, চঞ্চল বেগে বিশ্বে দিল দোলা । দিবানিশা আছি নিদ্রাহর বিরহে তব নন্দনবন-অঙ্গন-স্বারে, মনোমোহন বন্ধু, আকুল প্রাণে পারিজাতমালা স্বগন্ধ হানে ॥ বিদায়দিনের প্রথম হাওয়াটা এবার উৎসবের মধ্যে নিঃশ্বসিত হয়ে উঠল । এখনো কোকিল ডাকছে, এখনো বকুলবনের সম্বল অজস্ৰ, এখনো আম্রমঞ্জরীর নিমন্ত্রণে মৌমাছিদের আনাগোনা, কিন্তু তবু এই চঞ্চলতার অন্তরে অস্তরে একটা বেদন শিউরিয়ে উঠল। সভার বীণা বুঝি নীরব হবে, পথের একতারায় এবার স্বর বাধা হচ্ছে। দূর দিগন্তের নীলিমায় দেখা যায় অশ্রীর আভাস— অবসানের গোধূলিছায়৷ নামছে । চলে যায় মরি হায় বসন্তের দিন হে স্বন্দর, যে কবি তোমার অভিনন্দন করতে এসেছিল তার ছুটির দিন এল। २२||१