পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় ( հծ করতে পারি তা হলেই বুঝতে পারব, আর্টের সঙ্গে মানবজীবনের সম্বন্ধ কী এবং মাহুষের প্রাণধারণের চেষ্টার পক্ষে তার উপযোগিতা কতটুকু। এই মূল অনুসরণ করতে গেলে মধ্যপথে থামবার জো নেই, একেবারে তত্ত্বজ্ঞানের কোঠায় গিয়ে পৌছতে হয় এবং সেই তত্ত্বজ্ঞানের আশ্রয় অসীমের রাজ্যে। সত্যের সন্ধানে অসীমের পথে অভিযান আমাদের ভারতীয় প্রকৃতিগত ; হয়তো কোনো ইংরেজ শ্রোতৃমণ্ডলীর সমক্ষে আর্ট সম্বন্ধে আলোচনাকে এত স্থদুরে নিয়ে গিয়ে দাড় করাতে আমার সংকোচ হত। যদি বা সাহস ক’রে এ কাজে প্রবৃত্ত হতেম তা হলে গোড়াতেই 'ওরিএন্ট্যাল মিস্টসিজম নামধারী এক স্বরচিত কুহেলিকার আস্তরাল থেকে হয়তো আমার কথাগুলিকে তারা কিঞ্চিৎ অশ্রদ্ধামিশ্রিত কৌতুহলের সঙ্গে অস্পষ্ট ক’রে শুনতেন। কিন্তু, বর্তমান ক্ষেত্রে আমার ভরসার কারণ এই ষে, আমাদের পিতামহেরা আমাদের সমস্ত সম্বন্ধকেই একটি চিরস্তন সত্যের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত করে দেখতে চেষ্টা করেছেন । এই অনুশীলনায় তাদের সাহসের অস্ত ছিল না। যে-কোনো অভিব্যক্তি কলায় সংগীতে সাহিত্যে উদঘাটিত হয়েছে তাকে অনস্ততত্ত্বের পটভূমিকার উপর রেখে দেখতে পারলেই সত্যকে পাওয়া যায়– এই কথাটি গ্রহণ করা আযাদের পক্ষে কঠিন নয়। মানবীয় সত্যকে তিন ভাগে ভাগ করে দেখা যেতে পারে। সেই তিন বিভাগের শাশ্বত ভিত্তি সন্ধান করতে গেলেই উপনিষদের বাণীকে আশ্রয় করা ছাড়া আমাদের পক্ষে আর কোনো উপায় নেই। —বঙ্গবাণী, ১৩৩১ বৈশাখ, পৃ ৩০৩-০৫ রচনাবলী পৃ ৩৭e, প্রথম অনুচ্ছেদের শেষাংশ এই শেষোক্ত কথাটি আজ বিশেষ ভাবে আলোচ্য। যিনি বলেন আর্টের পরিচয় মানবের সংসারধাত্রার সঙ্গে একান্তভাবে সংগত, অর্থাৎ ‘আমি আছি’ এই ভাবের সূত্রটিই তার প্রধান অবলম্বন— তার এ কথাটা কি গ্রহণ করা চলে। প্রাত্যহিক D প্রাণধারণ-ব্যাপারের সঙ্গে সংগত ক’রে দেখলেই কি তাকে সত্যরূপে দেখা হয় । —বঙ্গবাণী, ১৩৩১ বৈশাখ, পৃ ৩১৫ রচনাবলী পৃ e৭e, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের সূচনাংশ প্রাত্যহিক প্রাণধারণের নানা ব্যাপারের সঙ্গে যে আর্ট মেলে না— এ কথা বলা চলে না। পূর্বেই বলেছি, সত্যের ভিন ভাগের মধ্যে আদান-প্রদানের ঐক্যপথ আছে। অর্থাৎ, তাদের মিলের মধ্যে সত্য আছে। তেমনি আবার তাদের বিভাগের মধ্যেও