পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনবাণী রক্ষবন্দন৷ অন্ধ ভূমিগর্ত হতে শুনেছিলে স্বর্যের আহবান প্রাণের প্রথম জাগরণে, তুমি বৃক্ষ, আদিপ্রাণ, উর্ধ্বশীর্ষে উচ্চারিলে আলোকের প্রথম বন্দন৷ ছন্দোহীন পাষাণের বক্ষ-’পরে ; আনিলে বেদনা নি:সাড় নিষ্ঠুর মরুস্থলে । সেদিন অম্বর-মাঝে প্ল্যামে নীলে মিশ্রমন্ত্রে স্বৰ্গলোকে জ্যোতিষ্কসমাজে মর্ত্যের মাহাত্ম্যগান করিলে ঘোষণা । যে-জীবন মরণতোরণদ্বার বারম্বার করি উত্তরণ যাত্রা করে যুগে যুগে অনস্তকালের তীর্থপথে নব নব পান্থশালে বিচিত্র নূতন দেহরথে, তাহারি বিজয়ধ্বজা উড়াইলে নিঃশঙ্ক গৌরবে অজ্ঞাতের সম্মুখে দাড়ায়ে। তোমার নিঃশব্দ রবে প্রথম ভেঙেছে স্বপ্ন ধরিত্রীর, চমকি উল্লসি নিজেরে পড়েছে তার মনে,– দেবকন্ত! দুঃসাহসী কবে যাত্রা করেছিল জ্যোতিঃস্বর্গ ছাড়ি দীনবেশে পাংশুমান গৈরিকবসন-পরা, খণ্ড কালে দেশে আমরার আনন্দেরে খণ্ড খণ্ড ভোগ করিবারে, দুঃখের সংঘাতে তারে বিদীর্ণ করিয়া বারে বারে নিবিড় করিয়া পেতে ।