পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○82r গ্রীক ও হিন্দু। সভ্যতার বৃদ্ধি অবশুই মুখজীবনের বৃদ্ধি ; তাহা হইলে তদুত্তরে বলিতে হয় যে, তুমি সে কথা বলিবে বটে, কিন্তু তোমার শ্রেণীর অতীতস্থ আর কেহ লে কথা বলিবে না। প্রকৃত সুখজীবন তাহাকে বলা যায়, যাহা আপেক্ষিক বুদ্ধিজাত ধারণা জন্য নহে ; কিন্তু তোমার সভ্যতাজন্য যে সুখজীবন, তাহ সম্পূর্ণই আপেক্ষিক বুদ্ধিজাত –নতুবা ঐ দেখ, যে সুন্দর বসনে তুমি সন্তোষ লাভ করিতেছ, অসভ্য অরণ্যবাসী তাহ টুকরা টুকরা করিয়া হেযুজ্ঞানে নিক্ষেপ করিয়া ফেলিতেছেঃ যে পানভোজনাদিতে তুমি অশেষ তৃপ্তিলাভ করিয়া থাক, অন্তে হয় ত তাহাতে ঘৃণায় নাকে হাত দিয়া অন্তরে সরিয়া দাড়ায়, ইত্যাদি । আসল কথা বাঞ্ছারাম, যদি এ জীবন ও জীবনব্যাপারের পরিণাম কিছু না থাকে, তাহা হইলে আমরা সকলেই বাতুলালয়ে প্রবেশ করিয়৷ বসিয়া আছি। যে ব্যক্তি প্রতিভাশালী এবং নূতনত্বের উদ্ভাবক ও আবিষ্কারক, তাহাপেক্ষ সমাজের দ্বিতীয় প্রবল শক্র ও অনিষ্টকারী আর কে হইতে পারে ? যে ব্যক্তি তোমার স্বদেশপ্রিয়, যে সহৃদয়, যে পরহিতের জন্য কাতর, আমি বলি প্রথম নম্বরের পাগল সেই ; ক্লারণ এরূপ সংসার যথায়, তথায় স্বার্থপরতাই একমাত্র উপাস্ত দেবতা হওয়া উচিত। তুমি বলিবে পরহিত ত ভাল বিষয় ; কিন্তু আমি বলি এই “ভাল বিষয়” কেবল তোমার কথায়, তদ্ভিন্ন উহার অন্য কোন মূল্য নাই ; ওরূপ মতি ও মত তোমার মস্তিষ্কের শিরাধমনীর আকুঞ্চনবিকুঞ্চনের একটু এদিক ওদিকের ফল মাত্র এবং আমরা জানি, তদ্রুপ আকুঞ্চন-বিকুঞ্চনের বিশেষ কোন মূল্য নাই। “অন্যের প্রতি সেইরূপ হিত আচরণ করিও, যেরূপ তোমার প্রতি আচরিত হওয়ার বাঞ্ছ। করিয়া থাক”—ইহাই যদি তোমার নীতিমূল হয়, তাহা হইলে দেখ ইহা দ্বারাও সেই আত্মস্বার্থের গৌরব স্থচিত হইতেছে, যেহেতু