করিয়া রাজ-উদ্যানে রক্ষা করা হইত, কিন্তু তাহাকে যে খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে পরিগণিত করা হইত, এমন আভাস পাওয়া যায় না। খ্রীঃ পূঃ চতুর্থ-পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রীক্ সাহিত্যে ময়ূরের পরিচয় পাওয়া যায়। আরিষ্টোফেনিসের নাটক ইহার প্রমাণ। রোমে ধনী গৃহস্থ ও কোন কোন সম্রাট্ শিখীকে ভোজ্যদ্রব্য না করিলে আনন্দবোধ করিতেন না। প্লিনির পুস্তকে দেখা যায় যে, কেহ কেহ ময়ূরকে বাড়ীতে অতি যত্ন করিয়া পুষিত এবং কিছুদিন পরে তাহারা সেই সকল গৃহপালিত হৃষ্টপুষ্ট শিখী ভক্ষ্যহিসাবে বিক্রয় করিয়া প্রচুর অর্থ উপার্জ্জন করিত। অতএব ইহা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, ময়ূর বহুকাল হইতে মানবগৃহে পালিত হইয়া আসিতেছে। আবার ময়ূরের পুচ্ছ ডাকাতের আভরণ বলিয়া নাটকের মধ্যে উল্লেখ দেখিয়াছি। পাখীর পালক যে মানুষের আভরণ-রূপে অনেক দিন হইতে মানব-সমাজে কোনও কোনও শ্রেণীর মধ্যে ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে, সে সম্বন্ধে অবশ্যই সন্দেহ নাই। যাহারা ময়ূরের মাংস ভক্ষণ করিতে চায় না, তাহারা ময়ূরপুচ্ছের লোভ সম্বরণ করিতে পারে না। বর্ষাঋতুর সঙ্গে ময়ূরের আনন্দসম্পর্কের কথা অনেকবার আলোচনা করিয়াছি; বাহুল্যভয়ে এস্থলে প্রলোভন সত্ত্বেও তাহার অবতারণা করিলাম না; শুধু উল্লেখমাত্র করিয়া ছাড়িয়া দিলাম।
শুক
এইবার আর একটি পাখীর কথা আসিয়া পড়িতেছে,—সেটি শুক; মহাকবির পুষ্পবাণবিলাসে এই মধুরবচন গৃহপালিত পাখীটির এইরূপ বর্ণনা আছে—“মন্দিরকীর-সুন্দরগিরঃ”। এই কীর অবশ্যই শুকের নামান্তর,—“কীরশুকৌ” সমৌ ইত্যমরঃ। প্রচণ্ড নিদাঘে এই পিঞ্জরস্থ শুক পিপাসার্ত্ত হইয়া বারিবিন্দু যাচ্ঞা করিতেছে। এই শুকপক্ষীর উদর শ্যামবর্ণ;—শ্যামল শাদ্বল দেখিয়া উদ্ভ্রান্তচিত্ত