কিন্তু ইহাদের কথা বলিবার পূর্বে আর একজন লোকোত্তর মহাপুরুষ—যুগনায়কের কথা বলা একান্ত প্রয়োজন। আমরা স্বামী বিবেকানন্দের কথা বলিতেছি। বঙ্কিমচন্দ্রের দেশমাতৃকার আদর্শ, আত্মত্যাগ ও কর্মযোগের সাধনা—যাঁহাদের মনের উপর অপরিসীম প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল, তাঁহাদের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠে’র আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া স্বামী বিবেকানন্দ দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করিয়াছিলেন, একথা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বজয়ী ধর্মপ্রচারক, হিন্দু-সভ্যতার বার্তা তিনি পাশ্চাত্য জগৎকে শুনাইয়াছিলেন, বেদান্তের ভেরী-নির্ঘোষে ভারতবাসীর বহির্মুখী মন তিনি অন্তর্মুখী করিয়াছিলেন, কর্মযোগ ও সেবাধর্মের মহিমা জাতির মধ্যে প্রচার করিয়াছিলেন, এসব কথা সুবিদিত। কিন্তু স্বামীজীর জীবনের আর একটা দিক তাঁহার স্বদেশবাসীরা এখনও ভাল করিয়া উপলব্ধি করিয়াছেন কিনা সন্দেহ। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার উপাসক—বীর্যবান স্বদেশপ্রেমিক। তাঁহার ভিতরে যে তীব্র স্বদেশপ্রেম ছিল তাহার তুলনা নাই—যেন অগ্নিগর্ভ আগ্নেয়গিরি। বিরাট কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়া সেই আগুন তিনি সংযত করিয়া রাখিতেন, কিন্তু তবুও নানাভাবে তাহা প্রকাশ হইয়া পড়িত। তাঁহার বিভিন্ন বক্তৃতা ও প্রবন্ধাবলীতে—বিশেষত ‘পত্রাবলী’তে ইহার নিদর্শন ভূরি ভূরি রহিয়াছে। নবীন ভারতকে প্রধানত তিন দিক
পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশী যুগের ঊষা
৩৩