সান্ত্বনা
চলে যাবার বয়স তার হয় নি। কিন্তু বরাত তো কারো কথা মেনে চলে না, কি আর করবে বল—
ননীবালার দু-চোখ জলে ভরে গেল। চোখের জলে যাতে মুখ ভেসে না যায় এজন্যে সে অশ্রু সংবরণের চেষ্টা করতে লাগল। এদের সামনে তার অশ্রু-বর্ষণ লজ্জাকর, তার বেদনা এরা বুঝবে না, কারণ এ ধরনের তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতা তাদের নেই, বিষয় ভোগে, আহারে-বিলাসে মগ্ন এরা—তার যে অভিজ্ঞতা তা এদের ধারণায় আসে না, এরা মনে করবে সে তার দুর্ভাগ্যকে এদের সামনে বেশী করে দেখাচ্চে।
প্রতিবেশী কানাই গাঙ্গুলীর পুত্রবধূ এসে তার পাশে বসল, তারা দু-জনে আলাপ করতে লাগল। তার বিয়ে বেশী দিন হয় নি—সবে ন-মাসের একটি মেয়ে কোলে। তার বাপের বাড়ি শান্তিপুরের কাছে হবিবপুরে, কথাবার্তায় বেশ একটু শহুরে টান আছে। সে বললে ক-দিন ধরেই ভাবচি, যাই কাকীমার সঙ্গে গিয়ে একটু দেখা করে আসি।
—সত্যি? আমার কথা কে বললে?
—সকলের কাছেই শুনচি। আমার শাশুড়ী বলেছিলেন যে গাঁয়ে এ পর্যন্ত আপনার মত বৌ একটাও আসে নি। আপনার সঙ্গে দেখা করতে বললেন। ভাল কথা—কাকীমা, আপনার নাম কি?
৯০