পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
আখ্যানমঞ্জরী।

অন্তঃকরণে যৎপরোনাস্তি ক্ষোভ ও অনুতাপ উপস্থিত হইল। তিনি বিবেচনা করিতে লাগিলেন, যদি আমি অসৎপথবর্ত্তী না হইতাম, সমস্ত পৈতৃক ধনেব অধিকারী হইয়া পরম সুখে কালযাপন করিতে পারিতাম। পিতা আমায় সতর্ক করিয়াছিলেন, তথাপি আমার জ্ঞানের উদয় হইল না। আমি পিতৃধনে বঞ্চিত হইয়াছি, ইহাতে আর কাহারও দোষ নাই, আমারই সম্পূর্ণ দোষ। এইরূপে তাঁহার জ্ঞানের উদয় হওয়াতে, অল্প দিনের মধ্যেই তদীয় চরিত্র সম্পূর্ণরূপে সংশোধিত হইল।

 কনিষ্ঠ সাতিশয় পিতৃভক্ত ও নিরতিশয় ভ্রাতৃবৎসল ছিলেন। জ্যেষ্ঠ, চবিত্রদোষবশতঃ পৈতৃক সম্পত্তিতে বঞ্চিত হইয়াছেন, এবং তজ্জন্য অতিশয় মনস্তাপ পাইয়াছেন, ইহা দেখিয়া, তিনি যৎপরোনাস্তি দুঃখিত হইয়াছিলেন, জ্যেষ্ঠ বঞ্চিত হওয়াতে, তিনি সমস্ত পৈতৃক সম্পত্তির অধিকারী হইয়াছেন, ইহাতে কিছুমাত্র সুখী ও আহ্লাদিত হয়েন নাই। অনন্তর যখন দেখিলেন, জ্যেষ্ঠের চরিত্র সম্পূর্ণরূপে সংশোধিত হইয়াছে, তখন তাঁহার দুঃখের সীমা রহিল না। তিনি এই বিবেচনা করিতে লাগিলেন, যদি পিতার জীবদ্দশায় ইঁহাব চরিত্রের এরূপ সংশোধন হইত; অথবা পিতা এখন পর্য্যন্ত জীবিত থাকিতেন, এবং ইঁহার চরিত্র সংশোধিত হইয়াছে দেখিতে