পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধর্ম্মপরায়ণতা।
২৭

অর্পণ না করিয়া মরিয়া যাই, এ দুর্ভাবনায় অস্থির ও অসুখী হইতে লাগিল এবং এ বিষয়ে সবিশেষ অনুসন্ধান করিতে আরম্ভ করিল।

 অবশেষে বৃদ্ধা শুনিতে পাইল, ঐ সম্পত্তির অধিকারী প্রুশিয়াদেশে বিবাহ করিয়াছিলেন এবং পত্নী ও কতিপয় শিশু সন্তান রাখিয়া গিয়াছেন। তখন বৃদ্ধার আহ্লাদের সীমা রহিল না। সে অবিলম্বে তাঁহার পত্নীর নিকট এই সংবাদ পাঠাইল যে, আপনার স্বামী আমার নিকট প্রচুর অর্থ রাখিয়া গিয়াছেন, আপনি সত্বর আসিয়া লইয়া যাইবেন। তদনুসারে, তিনি বৃদ্ধার ভবনে উপস্থিত হইলে, সে সমস্ত সম্পত্তি তদীয় হস্তে অর্পণ করিয়া কহিল, আজ আমি নিশ্চিন্ত হইলাম, আমার সকল দুর্ভাবনা দূর হইল। বোধ হয়, আমি অধিক দিন বাঁচিব না, আব কিছু দিন, আমি আপনাদের সংবাদ না পাইলে, আপনারা এই সম্পত্তিতে বঞ্চিত হইতেন।

 এই বলিয়া, বৃদ্ধা, যেরূপে ঐ সম্পত্তি তাহার হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল, সবিশেষ সমস্ত বর্ণন করিল। ধনস্বামীর পত্নী, অসম্ভাবিত রূপে প্রভূত সম্পত্তি লাভ করিয়া, যত আহ্লাদিত হইয়াছিলেন, সেই বৃদ্ধা দরিদ্রার বাক্য শ্রবণে ও ব্যবহার দর্শনে, তদপেক্ষা সহস্র গুণে অধিক আহ্লাদিত হইলেন। ফলতঃ, তিনি, তাহার ঈদৃশ অসাধারণ ন্যায়পরতা ও ধর্ম্মপরায়ণতা দর্শনে, অত্যন্ত চমৎকৃত হইয়া, আন্তরিক ভক্তি সহকারে ভূরি ভূরি ধন্যবাদ দিতে লাগিলেন, এবং মনে মনে বিবেচনা করিলেন, এই স্ত্রীলোক যেরূপ সাধু, ইহার তদনুরূপ