তাহার মুখে চোখে দিলাম। আকাশে গুঞ্জন ধ্বনি অস্পষ্ট হইতে অস্পষ্টতর হইয়া ক্রমে মিলাইয়া গেল।
ফয়ার তখনো জ্ঞান হয় নাই। কোলের উপর মাথাটি তুলিয়া লইলাম। নাড়ী ভালোই মনে হইল—যদিও একটু দুর্বল। কিছুক্ষণ পরে সে চোখ চাহিল।
বলিলাম—‘ভয় নাই; এরোপ্লেন চলিয়া গিয়াছে। তুমি বড় দুর্বল, এখন উঠিতে চেষ্টা করিও না; আমরা না হয় একটু বিশ্রাম করিয়া যাইব।’
ঊষার অস্পষ্ট আলোকে ফয়ার মুখখানি এক অপূর্ব সৌন্দর্য্যে মণ্ডিত হইয়া উঠিয়াছিল। নিটোল সর্বাঙ্গে উচ্ছ্বলিত ভরা যৌবন। গোলাপী রঙের রেশমি লুঙ্গি ও ব্লাউজের রঙ্ তাহার গায়ের রঙের সহিত মিশিয়া গিয়াছে।
ধীরে ধীরে তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া দিলাম। সে নিঃশব্দে চোখ বুজিয়া শুইয়া রহিল।
বেশী দেরী করা উচিত নয়। জাপানীরা যদি আসিয়া পড়ে, আমরা পথের মাঝখানে বেড়াজালের মধ্যে পড়িয়া যাইব।
ফয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। দুজনে আবার চলিলাম।
ফয়ার দিদিমা নাতনীকে পাইয়া আনন্দিত হইলেন। আমারও আশ্রয় মিলিল।
২রা মে ১৯৪২: তাগাগালে:
জাপানীরা ব্রহ্মদেশ অধিকার করিয়াছে। গ্রামের মধ্যেই আছি। দেশব্যাপী অরাজকতার মধ্যে এই বর্মী পল্লীর মধ্যে ভালোই আছি বলিতে