পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ

ভাবে শিক্ষকতাও করিয়াছেন। শিশুশিক্ষার প্রতি তাঁহার খুব দৃষ্টি ছিল। তখন এদেশে বর্তমান পদ্ধতির শিশুশিক্ষা আরম্ভ হয় নাই। তবু বহু পুরাতন কিণ্ডারগার্টেন পদ্ধতি দ্বারা তিনি শিশুদিগের মন গড়িয়া তুলিলেন। ছেলেদের লইয়াই তিনি বেশী সময় অতিবাহিত করিতেন। তারপর তাঁহার অবশিষ্ট সম্পত্তির আয় হইতেও গুপ্তভাবে তিনি বিদ্যালয়কে সাহায্য করিতেন এবং গরীব বিদ্যার্থীকে সাহায্য করিতেন। তিনি সাধারণ শিক্ষকের মত শিক্ষকতা করিতেন। ছেলেদের মনে উৎসাহ দিবার জন্য প্রাণে নূতন ভাব সৃষ্টি কবিবার জন্য তিনি নানা স্থানে ছেলেদের লইয়া যাইতেন। স্থানে স্থানে বনে জঙ্গলে পাহাড়ে গিয়া তাঁবু পাতিয়া ছেলেদিগকে প্রকৃতির সহিত পরিচয় করাইতেন এবং তাহার সমস্ত খরচ নিজেই বহন করিতেন।

 ১৯২১ সালের প্রারম্ভে ভারতে যে অসহযোগের বিরাট আন্দোলন আরম্ভ হয় এবং মহাত্মা গান্ধী যাহার নায়ক, সেই অসহযোগের কথা রাজা মহেন্দ্র প্রতাপের হৃদয়ে প্রায় ৩৬/৩৭ বৎসর পূর্বে প্রথম স্থান পাইয়াছিল। তিনি তাঁহার সমস্ত অস্ত্রশস্থ সরকারকে ফিরাইয়া দিয়াছিলেন। ডাক্তারী প্রভৃতি বিদেশী ঔষধ ব্যবহারের তিনি পক্ষপাতী ছিলেন না। আয়ুর্ব্বেদকে তিনি খুব উচ্চ স্থান দিতেন। সরকারের সহিত সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করিয়া তিনি তাঁহার নিজের আদর্শ অনুসারে—জাতির আদর্শ অনুসারে চলিয়াছিলেন।

 দাতা হিসাবে রাজা মহেন্দ্র প্রতাপের স্থান অনেক উচ্চে। তাঁহার ছোট ছোট দানের অন্ত ছিল না। অনেকে জানিতেই পারিত না—কে তাহাকে দান করিলেন, এমন ছিল তাঁহার দানের রীতি।

 এক সময় যুক্তপ্রদেশের আর্য্যসমাজের গুরুকুল ফরক্কাবাদে ছিল। কিন্তু সবার ইচ্ছা ছিল উহা বৃন্দাবনে তুলিয়া আনা হউক। বৃন্দাবনে কেহ আর্য্যসমাজীদের জমি দিতে স্বীকার করিল না। তখন তিনি বিনাসর্তে বৃন্দাবন