পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০
আজাদ হিন্দ ফৌজ

কাজ করিলে তাহার জন্য রেহাই নাই। কি জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করা হইয়াছে তাহা অপ্রাসঙ্গিক। উদ্দেশ্য যাহাই হউক না কেন এই কাজটাই অপরাধজনক।

 এডভোকেট জেনারেল, হালসবেরীতে “ইংলণ্ডের আইন” নামক গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত করিয়া বলেন যে, আন্তর্জ্জাতিক আইন ইংলণ্ডের আইনেরই একটি অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, এই আদালত কখনও আন্তর্জ্জাতিক আদালত নহে। এক রাষ্ট্রের বিরোধ প্রভৃতি সম্পর্কে মীমাংসা করিবার জন্য এই আদালতের সৃষ্টি হয় নাই। কাজেই এখানে আন্তর্জ্জাতিক আইন প্রয়োগের কোন প্রশ্নই উঠে না, এমন কি এই ক্ষেত্রে আন্তর্জ্জাতিক আইনের প্রয়োগ করা হইলেও কোন রাষ্ট্র সমরে ব্যাপৃত তাহার শত্রুপক্ষের সহিত সংশ্লিষ্ট বিদ্রোহী গণকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। ইহা ব্যতীত অন্য রাষ্ট্র কর্ত্তৃক বিদ্রোহীগণকে স্বীকার করা হইলেও বিদ্রোহীদের মূল রাষ্ট্রের তাহাতে কিছু আসে যায় না। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের এইরূপ আইনই প্রযোজ্য। স্যার নসিরওয়ান এই উপলক্ষে ওপেনহিমের আন্তর্জ্জাতিক আইনের গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত করিয়া তাঁহার যুক্তি সমর্থন করেন।

 স্যার নসিরওয়ান বলেন, এই ক্ষেত্রে কোন বিদ্রোহী রাষ্ট্র ও গৃহযুদ্ধের কথা উঠে না। মূল রাষ্ট্র কখনও বিদ্রোহী যুদ্ধরত রাষ্ট্রকে স্বীকার করিয়া লইতে পারে না। বিদ্রোহীগণ কোন অধিকৃত স্থানে জাতীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্ত্তন করে নাই। স্বদেশের কোন অংশেই তাহাদের শাসন ব্যবস্থা চালু ছিল না। আসামী পক্ষের সওয়ালে কর্ত্তৃপক্ষের নজীর সম্পর্কে উল্লেখ করিয়া স্যার নসিরওরান বলেন যে, আসামী পক্ষের সওয়াল জবাবে বহুবার মার্কিণ কর্ত্তৃপক্ষের নজীর উল্লেখ করা হইয়াছে। কিন্তু এখানকার আদালতের বিচার আমেরিকান আইন সংক্রান্ত অথবা আন্তর্জ্জাতিক আইন সম্বন্ধে আমেরিকান আদালতের সিদ্ধান্ত মানিয়া চলিবে না। বাস্তবিক আমেরিকান আইন অপেক্ষা ইংলণ্ডের আইনের অনেক তফাৎ রহিয়াছে।