পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তাদের ভূমিকা অভিনয় করে, হাসিয়ে কাঁদিয়ে, আনন্দের হাট বসিয়ে, করুণ রসের অশ্রুতে তার তখনকার আকাশ বাতাস ভিজিয়ে; সেই সব দলের অনেকেই আর ইহ-জগতে নেই—বিশেষ করে গোড়ার শৈশব ও কৈশোরের মানুষ-গুলি। তারা সব আজ আমার চারদিকে ঘিরে থাকলে হতো ভাল, আমার ক্ষীণ স্মৃতির তাঁরা খোরাক জোগাতেন, তার বিলুপ্ত মোছা পাতাগুলি নিজেদের ভাণ্ডার থেকে ভরে তুলতেন কত না চিত্তাকর্ষক দ্রব্য-সম্ভারে।

 যাই হোক, বলতে যখন বসেছি তখন এ গল্প আমাকে বলতেই হবে। আমার মনে হয় উঁচু ধরণের কবিতা বা ছবির মত গল্পও যদি হয় আধখানা ব্যক্ত এবং আধখানা অব্যক্ত, থানিকটা যার চোখের সামনে ভাসছে রূপে রঙে রেখায় আর খানিকটা পিছনে ফুটি-ফুটি হয়ে সারা চিত্রখানাকে রহস্যে করে রেখেছে থমথমে, তা’ হলে সেই গল্পই জমে ভাল। সবটাই যদি খুঁটিয়ে যথাযথ ফুটয়ে তুললুম তা’ হলে সে তো হ’লো ফটোগ্রাফ প্রকৃতির হুবহু অণুকরণ; হাজার ভাল হলেও তা কখন সৃষ্টি নয়, তা’তে আর্টও নেই, প্রাণও নেই— যেমন গ্রামোফোনের গান।

 খুব আগেকার—প্রায় শৈশব-ঘেষা কথা বলতে গেলে বেশি যে কিছু বলতে পারবো তা মনে হয় না। পৈতৃক বাস কোন্নগরে, সে ভিটা শুনেছি এখনও আছে, তবে আমি কখনো চোখে দেখি নি। আমার ঠাকুরদা’র মৃত্যুর