পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

পরে বাবা ও কাকা নিজের নিজের কর্মক্ষেত্রে চলে গেলে ঠাকুরমা কাশীবাস করেন; সেই থেকে কোন্নগরের বাস আমাদের উঠলো। অবোধ শৈশবের সেই অজ্ঞানের কুহেলী ভেদ করে প্রথম যখন জগত আমার অনভান্ত শিশুচোখে রূপ নিতে লাগল, স্মৃতির সাদা পাতাগুলিতে প্রথম যে ক’টির কালির আঁচড় পড়লো তা’তে চোখের ওপর খুব পুরাণ অস্পষ্ট ফটোর মত জাগে একখানা বাংলো ফ্যাসানের বাড়ী; সামনে রেল লাইন, এখানে ওখানে কালো কালো পাথর, তার ওপর কোঁকড়ানো কোঁকড়ানো হাতাজুড়ি ফার্ণ, দূরে আকাশের গায় নীল পর্ব্বতমালা, পূবে আর পশ্চিমে— একদিকে ত্রিকূট আর একদিকে দিগড়িয়া। বাড়ীখানি ছিল এক সাহেবের, বাবা সেখানি ভাড়া নিয়ে জামার পাগলী মাকে সেখানে রেখেছিলেন। স্থানটি রোহিণী গ্রাম, দেওঘর থেকে দু’মাইল দূরে। রোহিণীতে মাকে রাখার কারণ বোধহয় এই যে, তার কাছেই দেওঘরে দাদাবাবু (মাতামহ) শ্রীরাজনারায়ণ বসুর বাড়ী। তাঁরা সময়ে অসময়ে তাঁদের পাগলী মেয়েকে দেখবেন।

 আমার বাবা ডাক্তার কে ডি ঘোষ (কৃষ্ণধন ঘোষ) ছিলেন পুরো দস্তুর সাহেব, থাকতেনও সেই ষ্টাইলে। বড় বাড়ী, খানসামা, বাবুর্চ্চি, বয়, আয়া, আসবাব-পত্র কোন অনুষ্ঠানেরই ত্রুটি ছিল না। এখনও এই রোহিণীর বাড়ীর বাবুর্চ্চিখানাটা আমার লুব্ধ মনের স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করছে, বোধ হয় অনেক কাটলেট চপ অমলেটেরই রস ওটাকে করে রেখেছে আজও অমন