পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

উজ্জ্বল ও ঘোরাল। নিজকে আমার মনে আছে— এই বয়সে নিকার-বকার পরা রোগা ছোট্ট ছেলে। দিদিও (শ্রীসরোজিনী ঘোষ) সঙ্গে ছিলেন আমার নিত্য-সঙ্গিনী খেলার সাথী হয়ে; পিঠোপিঠি বলে আমরা ঝগড়া করতাম বিস্তর কিন্তু একজনকে না হ’লেও আর একজনের এক দণ্ড চলতো না। এই বাড়ীতে কাটানো শৈশবের অংশটুকুর সব কিছুই ভুলে গেছি, একটি তুচ্ছ ঘটনা ছাড়া। একদিন একজন খানসামার সহিত খেলতে খেলতে তাকে ঢিল ছুড়ে মেরেছিলুম। সে নাকে ঝুঁজিয়ে পড়া রক্ত মুছতে মুছতে ভয় দেখিয়েছিল মেম সাহেবকে (মাকে) বলে দেবে বলে। বোধ হয় শিশুর কোমল প্রাণে সেই মার খাবার আতঙ্কের স্মৃতি দুরপনেয় হয়ে মনের পটে বসে গেছিল বলেই আজও চিত্রটি টিঁকে আছে।

 আমাদের জীবনে যত ঘটনা ঘটে তাকে বাটালী দিয়ে কুঁদে গভীর করে দেয় কারা জানো? যাদের জগতে বড়ই বদনাম সেই ভর্ৎসিত লাঞ্ছিত কাম ক্রোধ লোভ আদি ছয়টি রিপু। আসলে বোধ হয় ওরা আমাদের রিপুর চেয়ে বন্ধু, সচিব সখী ও গৃহিণীই বেশী। আগেই বলেছি সেটা ছিল সাহেবের বাড়ী। সাহেব তখন সপরিবারে ছিলেন বিলেতে আর তাঁর অনেক আসবাব পত্র নীচের তলায় সামনের ঘরটায় ছিল সাজানো। খুব বড় একটা টেবিলে (বোধ হয়, বিলিয়ার্ড টেবিল) বেলোয়ারী কাচের, পেতলের ও সোণার মত ঝকঝকে রঙীন কত কি যে ছিল একটি সাজানো মনোহারী দোকানের মত। রহস্যে অভি-