পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

করে দেশে নিয়ে আসেন। তার পরে দেশে আসেন বড়দা’ ১৮৯৩ সালের এপ্রিল মাসে। কুচবেহার মহারাজ-কুমারের শিক্ষক হবার পর আজমিরে গিয়ে ১৫০০ টাকা ঋণ করে বড়দা’ যখন বিলাতে টাকা পাঠালেন তখন মেজদা’ মনোমোহন দেশে আসতে পারলেন। এইখানে পড়লো তাঁদের বিলাতের শিক্ষা জীবনের যবনিকা।

 I. C. S পরীক্ষায় অরবিন্দ অকৃতকার্য্য হবার পর বাবা নিরাশ হয়ে পড়েন, তাঁর বড় সাধ ছিল অরবিন্দ I. C. S হয়ে এসে তাঁর মুখোজ্জ্বল করবেন। আজ বাবা বেঁচে থাকলে তাঁর দেশ-বিশ্রুত সন্তানের পৃথিবীব্যাপী যশ কি ভাবে নিতেন জানি নে। সন্তানের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে মা বাপের সাধ আকাঙ্ক্ষার মূল্য এইটুকু, খুব কম পিতা মাতাই সন্তানকে তার নিজের পথে বিকাশ লাভ করতে দেয়, সংস্কার-বদ্ধ স্নেহ-অন্ধ তাদের মন ও প্রকৃতি অবোধ অবুঝ সন্তানকে গরু-তাড়ানো করে তাড়িয়ে নিয়ে চলে নিজের বাসনার সাধ আকাঙ্ক্ষার পথে। মায়ের ও বাপের ভালবাসা স্থূল দৃষ্টিতে দেখতে বেশ নিঃস্বার্থ ও উচ্চস্তরের বলে দেখায় বটে কিন্তু আসলে সে প্রেমও যথেষ্ট স্বার্থদুষ্ট। সাধারণ সংসারী মা বাপ চায় সন্তানকে দিয়ে অর্থ পেতে, সাংসারিক সুখ সুবিধা করে নিতে, যশ মান সম্ভ্রম কুলগৌরব বাড়াতে। কথায় কথায় তাদের ঐ এক অজুহাত, “আমরা যে এত কষ্টে ওকে মানুষ কল্লাম! সন্তানের প্রকৃত কল্যাণ—তার প্রকৃতিরই যথার্থ বিকাশ ও উন্মেষ খুব কম মা বাপই বোঝে বা

২০