পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

ডাকের অনুসরণ করে। রাত্রে ঘুমের ঘোরে আমি উঠে জাগা মানুষের মত ঘুরতুম somnambulismএর মোহে, দশ বার জন লোক মিলে আমাকে এনে খাটে শোয়াতে পারতো না, এত জোর আসতো আমার মত জীর্ণ শীর্ণ কৃশকায় বালকের শরীরে। একদিন একেবারে নীচে নেমে বাবুর্চ্চিখানার উঁচু চুলোর গন্‌গনে আগুনের কাছে চলে গেছিলুম।

 বোধ হয় এই সব কারণে ও-বাড়ী ছেড়ে দিয়ে গোমস্ লেনের বড় বাঙলো প্যাটার্ণের একতলা বাড়ীতে আমাদের আসা হয়েছিল। এমনি আমাদের অদৃষ্ট—দেখা গেল সে বাড়ীতেও আছে ভূতের বাথান। সে অপূর্ব্ব ইতিহাস পরে বলছি।

 আমাকে বাবার যে বন্ধুটি রোহিণী থেকে নিয়ে এলেন তাঁর নাম ছিল চিন্তামণি ভঞ্জ চৌধুরী; খুলনার তিনি ছিলেন এক দুঃস্থ ক্ষুদে জমিদার,—বাবার এক গ্লাসের ইয়ার। গাঢ় শ্যামবর্ণ মোটা সোটা গোলগাল ভুঁড়েল মানুষটি, গোল নাক—bottle nose যাকে বলে; চিন্তামণি ছিলেন বড় রসিক লোক, তাঁর সঙের মত হাবভাবে সবাই হেসে কুটিপাটি হ’তো। রহস্য করে তিনি দিদিকে বলতেন ‘মাসী’, দিদিও রেগে কাঁই হতেন তাঁর পায়ে-পড়া রসিকতায়, দু’জনের কাণ্ড দেখে সবাই হেসে গড়াগড়ি দিত। আমি কলকেতায় আসবার এক মাস আন্দাজ পরে একদিন ভোর চারটের সময় ঝাঁকড়া চুল বেচো কুকুরটা ডাকাডাকি ঝাঁপাঝাপি জুড়ে দিল। সবাই বুঝলো খুলনা থেকে বাবা এসেছেন, বাবার সাড়া পেলেই কুকুরটা ঐ রকম লম্ফ

৪৪