পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 আমাদের এক মুসলমানী ঝি ছিল, সে একরোখা মেয়ে, কথাটা শুনে নথ নেড়ে তেওয়ারীকে ঠাট্টা করে দু’শ কথা শুনিয়ে দিলে। তেওয়ারীজী ঐ ছাদে ডুমুর গাছের কাছে যাবার জন্যে তাকে challenge করায় রাগী মেয়েটাও রাগ করে সিঁড়ি দিয়ে উঠে সরাসর চলে গেল অকুস্থানে এবং তখনি আবার যথাশাস্ত্র ফিরে এসে ঘাড় মুড় ভেঙে পড়লো ফিট হয়ে। তার জ্ঞান করাতে আধঘণ্টাটাক লেগেছিল। তারপর থেকে দু এক দিন রাত্রে উঠে দেখতুম দরজার খড়খড়ি খুলে বাবা মাঝে মাঝে বারাণ্ডার দিকে দেখছেন আর গুলিভরা পিস্তল হাতে ঘরের মধ্যে ঘুরছেন। ভূত কি স্বদেশী বিপ্লবী, যে, গুলি করলেই ‘বন্দেমাতরম্’ বলে ধরায় লুটিয়ে পড়বে আর একটা পিলে চমকানি গোছের confession করে বুভুক্ষু সংবাদ পত্রগুলির লম্বা চওড়া (flaring headlines) স্তম্ভের খোরাক যুগিয়ে যথাশাস্ত্র মরে যাবে?

 এই গোমস্ লেনের বাড়ীতে এক বুড়ী গয়লানী দুধ যোগাতো, তার নাকে ছিল এক প্রকাণ্ড ফাঁদী নথ।অতবড় নথ আর আজকাল কোথাও বড় একটা দেখা যায় না। মা ও সবাই আমায় ক্ষেপাতো ঐ বুড়ী গয়লানীকে আমার বৌ বলে আর গয়লানীও আমাকে চুমো খাবার জন্যে ধরতে আসতো তার শিরাকীর্ণ হাত দুটো মেলে। আমি চিল চীৎকার করে চেঁচিয়ে দিতুম কান্না জুড়ে। ঐ ডুমুর গাছটার ওধারে ছিল বুড়ীর বাড়ী, সেইখানে থাকতো তার এক গোয়াল গাই আর বুড়ো

৫০