পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গৌরচন্দ্রিকা

কি বলবার আছে, এ বস্তুটি দেশে কি করে এলো, এ সব দেশের মানুষের শোনবার প্রয়োজন আছে বলেই আমার বিশ্বাস।

 আমার জীবনের শেষ অংশ সাধন জীবনের কাহিনী, এই সাধন জীবন আরম্ভ হয় সুরাটে লেলের দর্শন থেকে আর শেষ হয় গত ১৯২৯ অব্দের ডিসেম্বর মাসে যখন পণ্ডিচারী শ্রীঅরবিন্দ যোগাশ্রম ছেড়ে বাঙলায় আসি। এ গল্পও খুবই চিত্তাকর্ষক হবে। কেবল এত কথা বলবার জন্যে সামর্থ্য ও পরমায়ুতে কুলবে কি না জানি না।

 পারিবারিক জীবনেরও সব ঘটনা প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়, কারণ আমার জীবনের গতি চিরদিনই বাঁধা পথের বাইরে চলেছে, আমি স্বভাব-বিদ্রোহী। যাদের নিয়ে এই সব খেলা চলেছিল তাদের অনেকে এখনও জীবিত। তবু যতদূর বলা যায় সবই অকপটে বলবো, নিজেকে চূণ-কাম করে সাদা দেখাবার কোন প্রয়াসই এতে থাকবে না। আমি নীতিশাস্ত্রটা একটা উপসর্গ বলে মনে করি, শক্তিমানের জন্যে ও-শাস্ত্রটা আদৌ নয়, আর লোকমতের ভয় আমার কাছে বড় হীনতার ও লজ্জার কথা মনে হয়। লোকের আমি ধারি কি? যারা পরের বিচার করে তারা নিজেরা ক’জন নিখুঁৎ? নিজের পাপটি লুকিয়ে মানুষ পরের ঠিক সেই পাপেরই সাজা দিতে উদ্যত হয়, এই তো সর্ব্বত্র দেখে আসছি। যার সতীত্বের বড় জাঁক ও আড়ম্বর সে হচ্ছে চিরদিনই সব জায়গায় দীঘল-ঘোমটা নারী।