বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭২
আরণ্যক

 দেখিলাম। আশার আনন্দে গিরধারীলালের নিরীহ চক্ষু দুটি উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে।

 —ভাল কলমের লেবু। এক—একটা হবে এক পোয়া। অনেক দিন থেকে আমার ইচ্ছে, যদি কখনো জমি জায়গা করতে পারি, তবে ভাল সরবতী লেবুর গাছ লাগাব। পরের দোরে লেবু চাইতে গিয়ে কতবার অপমান হয়েছি হুজুর। সে দুঃখ আর রাখব না।

অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ

 এখান হইতে চলিয়া যাইবার সময় আসিয়াছে। একবার ভানুমতীর সঙ্গে দেখা করিবার ইচ্ছা প্রবল হইল। ধনঝরি শৈলমালা একটি সুন্দর স্বপ্নের মত আমার মন অধিকার করিয়া আছে,•••তাহার বনানী•••তাহার জ্যোৎস্নালোকিত রাত্রি,•••

 সঙ্গে লইলাম যুগলপ্রসাদকে। তহসিলদার সজ্জন সিংয়ের ঘোড়াটাতে যুগলপ্রসাদ চড়িয়াছিল—আমাদের মহালের সীমানা পার হইতে না-হইতেই বলিল-হুজুর, এ-ঘোড়া চলবে না, জঙ্গলের পথে রহিল চাল ধরলেই হেঁচটি খেয়ে পড়ে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে আমারও পা খোড়া হবে। বদলে নিয়ে আসি।

 তাহাকে আশ্বস্ত করিলাম। সজ্জন সিং ভাল সওয়ার, সে কতবার পূর্ণিয়ায় মোকদ্দমা তদারক করিতে গিয়াছে এই ঘোড়ায়। পূর্ণিয়া যাইতে হইলে কেমন পথে যাইতে হয় যুগলপ্রসাদের তাহা অজ্ঞাত নয় নিশ্চয়ই।

 শীঘ্রই কারো নদী পার হইলাম।

 তার পর অরণ্য, অরণ্য-সুন্দর, অপূৰ্ব, ঘন, নির্জন অরণ্য! পূর্বেই বলিয়াছি এ-জঙ্গলে মাথায় উপরে গাছপালার ডালে ডালে জড়াজড়ি নাই—