ছেলেই রাজ্যের রাজা হবে বুড়ো রাজার পরে। তাই জেনে ছোটরাণী সৎ ছেলেকে বিষ দেয় খাবারের সঙ্গে—
দীনু ভটচাজ বলে উঠলেন-এ যে রামায়ণ বাবাজি!
—তাই। অর্থ আর যশ-মান বড় খারাপ জিনিস মামা। সেই জন্যেই ওসব ছেড়ে দিয়েছিলাম। তারপর শুনুন, এমন চক্রান্ত আরম্ভ হোলো রাজবাড়িতে যে সেখানে থাকা আর চললো না। তিনি তার স্ত্রীপুত্র নিয়ে ভরসুৎ, গ্রামে একটা ছোট বাড়িতে থাকেন, নিজের পরিচয় দিতেন না কাউকে। আমার কাছে বলতেন, রাজা হোতে তিনি আর চান না। রাজারাজড়ার কাণ্ড দেখে তাঁর ঘেন্না হয়ে গিয়েচে রাজপদের ওপর।
ফণি চক্কত্তি বললেন—তখনো তিনি রাজা হন নি কেন?
—বুড়ো তখনো বেঁচে। তাঁর বয়েস প্রায় আশি। এই ছেলেই আমার সমবয়সী। আহা, অনেক দিন পরে আবার সেকথা মনে পড়লো। অম্বিকা দেবীর মন্দিরে পূর্বদিকের পাথর-বাঁধানো চাতালে বসে জ্যোৎস্নারাত্রে দুজনে বসে গল্প করতাম, সে-সব কি দিনই গিয়েছে। সামনে মস্ত বড় পুকুর, পুকুরের ওপারে রামজীর মন্দির। কি সুন্দর জায়গাটি ছিল। তাঁর ঘোট সৎমা বিষ দিয়েছিল খাবারের সঙ্গে, কেবল এক বিশ্বস্ত চাকর জানতে পেরে তাঁকে খেতে বারণ করে। তিনি খাওয়ার ভান করে বলেন যে তার শরীর কেমন করছে, মাথা ঝিমঝিম্ করচে, এই বলে নিজের ঘরে শুয়ে পড়েন গিয়ে। ছোট সৎমা শুনে হেসেছিল, তাও তিনি শুনেছিলেন সেই বিশ্বস্ত চাকরের মুখে। সেই রাত্রেই তিনি রাজবাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন, কারণ শুনলেন ভীষণ ষড়যন্ত্র চলেচে ভেতরে ভেতরে। ছোট রাণীর দল তাঁকে মারবেই। বুড়ো রাজা অকর্মণ্য, ছছাটরাণীর হাতে খেলার পুতুল।
দীনু ভটচাজ বললেন-না পালালি, মঘা এড়াবি ক’ঘা। -অমন সৎমা সব করতি পারে। বাবাঃ, শুনেও গা কেমন করে।
রূপচাঁদ মুখুয্যে বললেন-তারপর? -তারপর আর কি। আমি সেখানে দু’মাস ছিলাম। এই দু’মাসের
১২২