বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আধঘণ্টা পরে। গভীর পরামর্শ হচ্ছে দেওয়ান ও ছোটসাহেবের মধ্যে।

 ডেভিড্ বললে—পাঁচটা লাস? লুকুবে কনে? সেটা বোঝো আগে। বাঁওড়ের জলে হবে না। বাঁধালের মুখে লাস বাধবে এসে।

 —তা নয়, সায়েব। কোথাও ভাসাবো না। হীরে ডোম আর তার শালা কালুকে আপনি হুকুম দিন। আমি এক ব্যবস্থা ঠিক করিচি-

 —আগে করে আসি। তারপর এত্তেলা দেবো। আপনি ওদের হুকুম দিন। রাত থাকতি থাকতি কাজ সারতি হবে। ভোরের আগে সব শেষ করতি হবে। রক্ত থাকলি ধুয়ে ফেলতি হবে পথের ওপর। রসিক ব্যাটাকে কিছু জরিমানা করে দেবেন কাল।

 সেই রাত্রেই সব কাজ মিটিয়ে ভোরের আগে রাজারাম বাড়ি এসে শুয়ে রইলেন। জগদম্বা জিগ্যেস করলেন বাবা, এত কাজের ভিড়? রাত তঁ শেষ হতি চললো—

 রাজারাম বললেন –হিসেব-নিকেশের কাজ চলছে কিনা। খাতাপত্তরের ব্যাপার। এ কি সহজে মেটে?


 ভবানী বাঁড়ুয্যে খোকাকে নিয়ে পাড়ায় মাছ খুঁজতে বার হয়েছিলেন। খোকা বেশ সুন্দর ফুটফুটে দেখতে, অনেক কথা বলে, বেশ টরটরে।

 ভবানী খোকাকে বলেন-ও থোকন, মাছ খাবি?

 খোকা ঘাড় নেড়ে বলে-মাছ।

 —মাছ?

 মাছ।

 আরও কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে দেখলেন যদু জেলে মাছ নিয়ে আসছে। যদু। তাঁকে দেখে প্রণাম করে বললে—মাছ নেবেন গা?

 —কি মাছ?

 —একটা ভেটকি মাছ আছে, সের দেড়েক হবে।

১৯১