বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৫৯

রামের অঙ্গুরী দিয়া হনু কয় তাঁরে,
“কাঁধে ওঠ, যাই মাগো লইয়া তোমারে।”
সীতা কন, ‘‘বাছা তুই এতটুকু হয়ে
কেমনে যাইবে বল মোরে কাঁধে লয়ে?”
শুনিয়া তাঁহার কথা হেসে হনুমান,
দেখিতে-দেখিতে হয় পর্বত সমান।
সীতা কন, “বুঝিলাম, ভারি বল তোর,
কিন্তু বাপ্‌, মাথা যে রে ঘুরে যাবে মোর।’
হনু কয়, ‘‘তবে মাতা কাজ নাই গিয়া,
রাম লক্ষ্মণেরে মোরা হেথা আসি নিয়া।
একখানি অলংকার দাও মা আমারে,
রামের নিকট গিয়া দেখাইতে তাঁরে।”
শুনিয়া মাথার মণি দেন সীতা খুলি,
বিদায় হইল হনু লয়ে পদধূলি।
যাবার সময় হনু মনে-মনে কয়,
‘রাক্ষস কেমন বীর না দেখিলে নয়।’
হুপ্‌-হাপ্‌, ধুপ্‌-ধাপ্‌ করি তারপর,
অশোকের বন হনু ভাঙে মড়মড়্‌।
বড়-বড় গাছ তোলে দিয়া এক টান,
গাছ দিয়া বাড়ি-ঘর করে খান্‌-খান্‌।
তখন রাক্ষস যত করি “মার-মার,”
ক্ষেপিয়া আইল লয়ে ঢাল তলোয়ার।
হনু বলে, “জয় রাম! কে মরিবি আয়।”
শতেক রাক্ষস মরে তার এক ঘায়।
সাগরের ঢেউ যেন, শেষ নাই তার।
“জয় রাম! জয় রাম!” হাঁকে হনুমান।
রাক্ষসের মাথা পড়ে হয়ে খান্‌-খান্‌।
হাতি দিয়া হাতি মারে, ঘোড়া দিয়া ঘোড়া,
রাক্ষসে রাক্ষস ঠোকে লয়ে জোড়া-জোড়া।
জাম্বুমালী, বিরূপাক্ষ, ভাসকর্ণ আর,
দুর্ধর প্রঘসে মারি করে চুরমার।
যুপাক্ষের হাড় ভাঙে শাল গাছ দিয়া,
অক্ষেরে করিল গুঁড়া সানে আছাড়িয়া।
রাবণের ছেলে অক্ষ মরিল যখন,
বড় ছেলে ইন্দ্রজিতে পাঠাল রাবণ।