পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাটানো যায় বা আসাও উচিৎ কিন্তু চিরদিন এখানে যে কাটাবে তাকে তাহোলে নিজের স্বাৰ্থ সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে সেবাত্ৰতে দীক্ষিত হতে হবে, যে বলবে, আমার নিজের কিছু চাই নে, দেশের ছেলেদের জন্তে স্কুল খুলবো, তাদের পড়াবো, দরিদ্রদের দুঃখ মোচন করবো, ম্যালেরিয়া তাড়াবো ইত্যাদি—সে রকম মানুষ হাসিমুখে সমস্ত অসুবিধা ও অন্ধকারকে বরণ করে নিয়ে এখানে এসে চিরকাল বাস করতে পারে । আজ শেষরাত্রে ঘুম ভেঙে একবার বাইরে এলুম, মনে হোল খুব মৃত্যু জ্যোৎস্নালোক ঘরের দাওয়ায়—চাদ তো অনেকক্ষণ অস্ত গিয়েচে তবে এখন কিসের জ্যোৎস্না ? ক্ষীণ হোলেও এটা জ্যোৎস্নালোক সে বিষয়ে কোনো ভুল নেই, কারণ খুঁটর ছায় পড়েচে, বেড়ার কঞ্চির ছায় পড়েচে, আমার নিজের ছায় পড়েচে । দূর আকাশে একসময় হঠাৎ নজর পড়ল—দেখি শইতে তারা উঠেচে। শুক্র জ্যোৎস্ন। এত স্পষ্ট কখনো দেখিনি জীবনে—সত্যি কথা বলতে কি স্পষ্টই কি বা অস্পষ্টই কি--শুক্র জ্যোৎস্নাই দেখিনি কখনো । এমন অবাক হয়ে গেলুম, এত কথা মনে আসতে লাগল যে ঘুম আর হোল না। আমার ধন পৃথিবীর গণ্ডি ছাড়িয়ে বহুদুর বোমপথে গেল উড়ে—আদি যে গ্রগুলোকের জীব, আমার নাম, স্থান যে বিশাল শূন্তের মধ্যে অন্ত আরও গ্রহ ও তাগ তারা দলের মধ্যে কত কোটী স্থৰ্য্য সেখানে দীপ্যমাণ কত নীহারিক পুঞ্জ, কত দৃপ্ত অদৃষ্ঠ শক্তি, বিদ্যুৎ, কসমিক্‌ রে—এদের সঙ্গে আমার আত্মা যেন এক হয়ে গেল। আমার অর্থ লিঙ্গ, বৈষয়িক আত্মা মুক্তিলাভ ক.ে অল্পকয়েক মুহূর্ভের জন্তে, ঐ শুক্র তারার আলোর পথ বেয়ে উড়ে চলে গেল অসীম ছাতিলোকের মধ্যে। কাল এখন থেকে চলে যাবো। তাই যেন সব কিছুর ওপর মায় হচ্চে । ছায়াঘন অপরাহ্লে আমাদের পোড়ো ভিটের পেছনকার বঁাশ বনে বেড়াতে গিয়ে এক জায়গায় খানিকটা চুপ করে বসে রইলুদ। রাঙা রোদ পড়েচে ওদিকের একটা বঁাশ ঝাড়ের গায়ে । সেই রাঙা রোদ মাখানে রাশঝাড়ের দিকে চেয়ে সমস্ত জীবনের গভীব রহস্তের অনুভূতি যেন মনে এসে জমূল । কতকাল আগে এমন কীৰ্ত্তিক মাসের দিনে মামার বাড়ী থেকে বাবার সঙ্গে