পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখচি এই অবজ্ঞা । বেলেডাঙ্গায় পথের ধারে একটা কামারের দোকানে দশ বারো জন লোক বসে আছে—তার মধ্যে আর বছরের সেই হরমোতিও বসে আছে—আর বছরের সে মোল্লাহাটি কুঠার সাহেবদের গল্প করলে। পুলের ওপারে গিয়ে দাড়ালুম—এক ফকির সেখানে গোয়ালপাড়ায় একটা মেয়ের সঙ্গে বসে গল্প করচে । আমায় আবার সে ভক্তি করে একটা বিড়ি খাওয়ালে। আমি তাকে একটা পয়সা দিলাম। হরমোতি এসে বল্লে—বাবু, ছুক্খের কথা বলুবো কি, আমার ছেলেডা বলে তোমাকে আর ভাত দেবে। না। বিরাশি বছর বয়স আমার, কোথায় এখন যাই আমি এই বেদ্ধ বয়সে ? সন্ধ্যাবেলা ন’দির সঙ্গে রেণুর গল্প করি। রাত্রে এখন ঢোল বাজচে, জিতেন কামারের বাড়ী নাকি মনসার ভাসান হচ্ছে। একবার ভাবচি যাই, কিন্তু বাড়ীতে আমি এক, তার ওপর আজ অমাবস্তার রাত—জিনিসটা পত্রটা আছে, ফেলে রেখে ভরসা করে যেতে পরিচিনে । রোয়াকে বলে লিখচি ভারী আরামে, বকুলগাছে, কুল গাছে কত কি পাখী ডাক্‌চে–বিম্বপুষ্পের মধুর গন্ধ ভেসে আসচে বাতালে-দুটো বিড়ালছানা আমার মাছুরের ওপর লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা করচে, সামনের রাস্ত দিয়ে ছেলেরা আম পাড়তে যাচ্চে, জেলেরা মাছ নিয়ে যাচ্চে ; একবার পটল যাচ্ছিন্ন, আমি ডেকে বল্লুম-ও পটল, উমা চলে গিয়েচে ? পটল বড় , লাজুক মেয়ে। পেয়ারাতলা পৰ্য্যস্ত এসে নীচুমুখে দাড়িয়ে বল্লে—দিদি, ২৭শে জৈষ্ঠ চলে গিয়েচে দাদা। ছেলেবেলার সেই বুড়ে আকন গাছটায় থোলো থোলো ফুল ফুটেচে। পার্থীর ডাক আর পুষ্পের সুবাসে স্থানটা মাতিয়ে রেখেচে । বিকেলে হাটে গেলাম। এ বছর গ্রীষ্মের ছুটীর প্রথম হাট। পথেই আফজলের সঙ্গে দেখা, সে হাটে পটল বেচতে যাচ্চে। তুততলার স্কুলের ভিটে দেখিয়ে বল্লে—দা’ ঠাকুর, এখেনে মোরা পড়িচি, কত আনন্দই করিচি এখানে, মনে আছে ? তা আছে। তুততলার স্কুলের কথায় হাড়ি-বেচা মাষ্টারের কথা উঠল, আর কে কে আমাদের সঙ্গে পড়তে, সে কথাও উঠল। অনেকদিন পরে গোপাল নগরের হাটে গিয়েচি। সেই আশ্বিন মাসের