পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঋষি রবীন্দ্রনাথ
১০৩

(২০)

 যেখান হইতে যাত্রা আরম্ভ হইয়াছিল, উপসংহারে আসিয়া সেখানেই যাত্রা শেষ করা যাইতেছে।—

 একটা প্রশ্ন তুলিয়াছিলাম যে, রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, ইহা প্রমাণ করা চলে কিনা। ইহা প্রমাণ করা স্বভাবতই অসম্ভব, এই মূল সত্য স্বীকার করিয়া লইয়াই এই বিষয়ে একটা প্রচেষ্টা করা গিয়াছে।

 ব্রহ্মের অস্তিত্বই কেহ প্রমাণ করিতে পারে না। সাংখ্যশাস্ত্র তো পরিষ্কারই রায় দিয়াছেন যে, প্রমাণের অভাবে ঈশ্বর অসিদ্ধ। বস্তুতঃ কোন কিছুর অস্তিত্ব প্রমাণের উপর নির্ভর করে না, আমার জানা বা না-জানার উপর একটি ধূলিকণাও নির্ভর করে না, কারণ অস্তিত্ব মাত্রেই স্বতঃসিদ্ধ।

 ঈশ্বরকে প্রমাণ করা যায় না, ইহা একটা সমস্যা হইতে পারে। কিন্তু বুদ্ধির নিকট এই সমস্যাটি আছে বলিয়াই যে ‘ঈশ্বর-নাস্তি’ হইবেন, ইহা কুযুক্তি। ঈশ্বর আছেন, ইহা প্রমাণ করা যায় না; তবু, ঈশ্বর আছেন,—ইহা যাঁহারা সাক্ষাৎভাবে জানেন, তাঁহাদেরই ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ বলা হয়। এমন যে সাংখ্যশাস্ত্র, প্রমাণের অভাবে যেখানে ঈশ্বরকে অসিদ্ধ বলিয়া বাতিল করা হইয়ছে, সেখানেও আত্মার অস্তিত্ব স্বীকৃত হইয়াছে।

 এই আত্মা সম্পর্কে প্রমাণের প্রয়োজন বা প্রশ্ন উঠে না, কারণ কেহই বলেন না যে, তিনি নিজে নাই। নিজের অস্তিত্ব অর্থাৎ আত্মা নাই, ইহা প্রমাণ করিতে